আওয়ামী লীগ আমলের আর্থিক অপরাধের তদন্তে কমিটি হচ্ছে

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত নানা আর্থিক অপরাধের তদন্তে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে অর্থপাচার, ঋণ কেলেঙ্কারি ও ব্যাংক খাতের বিপর্যয়ের একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, একটি বিশেষ গোষ্ঠী নিয়ম বহির্ভূতভাবে একাধিক ব্যাংকের মালিকানা গ্রহণ করে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এছাড়াও মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মহলের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে ২৮টি পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচারের তথ্যও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ধারাবাহিক ঋণ খেলাপ, দুর্নীতির ঘটনায় আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়েছে এবং উৎপাদনশীল খাত থেকে পুঁজি অন্যত্র সরে যাচ্ছে।
এ ছাড়া অভিবাসন খাতেও বড় ধরনের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গত এক দশকে হুন্ডি মাধ্যমে প্রবাসী আয়ে ১৩.৫ লাখ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে বলে জানানো হয়েছে, যা মতিঝিল-উত্তরা মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় চারগুণ।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বা অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িতদের বিচার শুরু করার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এখন তদন্ত শুরু হবে।”
তবে কমিটির সদস্যপদ, গঠনতন্ত্র ও কর্মপরিধি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।