সোমবার ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মাঘ ২০ ১৪৩১, ০৪ শা'বান ১৪৪৬

ব্রেকিং

খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর চিঠি রিটার্ন দাখিল না করা টিআইএনধারীরা নোটিস পাবেন: এনবিআর চেয়ারম্যান শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য ‘প্রত্যাখান’, মহাসড়ক থেকে সরে কলেজের সামনে তিতুমীর শিক্ষার্থীরা ফের লোকসানে বেক্সিমকো; উৎপাদন না থাকায় ‘কাঁচামাল বিক্রি’ সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি, আত্মহত্যার হুমকি দিলেন আহতরা ১৯ টাকা বাড়লো ১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের দাম সাত কলেজ নিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ চলছে: উপদেষ্টা রোজায় ভোগ্যপণ্য নিয়ে সমস্যা হবে না, আশ্বাস বাণিজ্য উপদেষ্টার ক্যাডেট কলেজে ভর্তির লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ মাজার জিয়ারতে যাওয়ার পথে এক পরিবারের চারজনের মৃত্যু তিতুমীরে আমরণ অনশনরত ৩ শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ভোটার হালনাগাদ: নিবন্ধনকেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে আইজিপিকে ইসির নির্দেশ আখেরি মোনাজাতে শান্তি ও কল্যাণ কামনা আখেরি মোনাজাতে ৪০ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণ নারীরাও আখেরি মোনাজাতে শরিক হলেন

অর্থনীতি

ফের লোকসানে বেক্সিমকো; উৎপাদন না থাকায় ‘কাঁচামাল বিক্রি’

 আপডেট: ২১:৩৮, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফের লোকসানে বেক্সিমকো; উৎপাদন না থাকায় ‘কাঁচামাল বিক্রি’

সবশেষ ছয় মাসে আগের বছরের প্রায় সমান লোকসান গুনল পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা বেক্সিমকো (বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি) লিমিটেড।

গত জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ কোম্পানির লোকসান হয়েছে ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর আগে ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে তারা ৩৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা লোকসান দেয়। যদিও তার আগের বছরে কোম্পানি ৭১০ কোটি ১৭ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছিল।

গত বছরের মার্চ প্রান্তিকেও লাভজনক ছিল কোম্পানিটি। কিন্তু জুন শেষে হিসাব বছরে লোকসান দেখা দেয় চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিবেদনে।

লোকসানে থাকার পরও বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয় বেক্সিমকো। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, তখনও কোম্পানির রিজার্ভে সাত হাজার ৫৯২ কোটি ৭১ লাখ টাকা ছিল।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ ছয় মাসে বেক্সিমকো শেয়ারপ্রতি লোকসান গুনেছে তিন টাকা ৭৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে প্রতি শেয়ারে তাদের মুনাফা ছিল ৮২ পয়সা।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৯৪ কোটি ৩২ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪২টি। এ হিসাবে গত ছয় মাসে মোট লোকসান ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

সবশেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান দুই টাকা ৫৮ পয়সা। তার আগের প্রান্তিকে মুনাফা ছিল শেয়ার প্রতি তিন পয়সা।

আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা চলছে। শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬ কারখানা।

এ গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর সালমান গ্রেপ্তার হন।

গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩২টি কারখানার নাম ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে ১৬টির অস্তিত্ব পায় এ বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি।

অস্তিত্ব না থাকা এ ১৬টির নামে ঋণ নেওয়া হয় ১২ হাজার কোটি টাকা। আর সব মিলিয়ে ৩২ প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকার ঋণ নেয়া হয়।

মোট ১৬টির মধ্যে ১১টি বস্ত্র ও পোশাক খাতের কোম্পানি লে-অফ ঘোষণা করা ছিল গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হয়নি।

অবশ্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও শাইনপুকুর সিরামিকসের মত বেক্সিমকো লিমিটেড আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।

লোকসানের বিষয়ে বেক্সিমকো ডিএসইর ওয়েবসাইটে তথ্য দিয়ে বলেছে, গত অগাস্ট থেকে কোনো ব্যাংক বেক্সিমকো লিমিটেডের নামে এলসি (ঋণপত্র) খোলেনি। জুলাই-ডিসেম্বরের বেশির ভাগ সময় কারখানার উৎপাদন বন্ধ ছিল।

কোনো ব্যাংকের সহায়তা না পেয়ে উৎপাদনে থাকতে পারেনি বেক্সিমকো। এমনকি কোম্পানির কাছে মজুত থাকা কাঁচামাল ইয়ার্ন ও ফেব্রিকস ব্যবহার করতে না পারায় কেনা দামের চেয়ে কমে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

বেক্সিমকো লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদ উল্ল্যাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘কোম্পানি তো উৎপাদনে নেই। মাল (পণ্য) বিক্রি করতে না পারলে তো লোকসান হবে।’’

ব্লক মার্কেটে বেক্সিমকোর শেয়ার

ঋণ কেলেঙ্কারির বিষয়ে বিশেষ নিরীক্ষার অপেক্ষায় থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার রোববার হাতবদল হয় ডিএসইর ব্লক মার্কেটে। যদিও মূল বাজারে কোনো ক্রেতা পাচ্ছে না শেয়ারটি।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ক্রেতা না পাওয়ায় গত ডিসেম্বর থেকে এক জায়গায় অর্থাৎ, ১১০ টাকা ১০ পয়সা দরে স্থির আছে শেয়ারটি।

রোববার ব্লক মার্কেটে শেয়ার হাতবদল হয় ৯৯ টাকা ১০ পয়সা দরে। মোট ১৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় ১৪ লাখ টাকায়।

এদিন ৩৩টি কোম্পানি ব্লক মার্কেটে ১৮ কোটি টাকার লেনদেন করে।

সূচক বাড়ল আট দিন পর

টানা আট কার্যদিবস পর বস্ত্র খাতে ভর করে রোববার সূচক বেড়েছে ডিএসইতে।

সপ্তাহের প্রথম দিন প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ১২৬। এর আগে টানা সাত দিন সূচক কমে ৯০ পয়েন্ট।

এদিন শেয়ার হাতবদল হয় ৩৫৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৮৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

ডিএসইর মোট লেনদেনের মধ্যে বস্ত্র খাতের অবদান সাধারণত ৪৫ কোটি থেকে ৫৫ কোটি টাকার ঘরে থাকে। সবশেষ সোমবার ৫৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল করে ডিএসইতে একক খাত হিসেবে শীর্ষে উঠে আসে এই খাত।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৪টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৮৭টির, কমেছে ১৫৫টির। আগের দরে লেনদেন হয় ৫২টি কোম্পানির শেয়ার।

বস্ত্র, ব্যাংক এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হাতবদল বাড়ায় ডিএসইর সার্বিক লেনদেনে শীর্ষে উঠে আসে এই তিন খাত।

সবচেয়ে বেশি দর বাড়ে গোল্ডেন সন, হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার ও ইফাদ অটোসের। সবচেয়ে বেশি দর হারায় কেয়া ঝিল বাংলা, বসুন্ধরা পেপার মিলস ও পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।