রিটার্ন জমার সময় বাড়ছে আরও ১৫ দিন
জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন ও সংঘাতের ধাক্কায় আয়কর রিটার্ন জমার যে আশা করা হয়েছিল সরকারের তরফে, তা এখন পর্যন্ত না হওয়ায় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার সময় আরো পনের দিন বাড়াচ্ছে সরকার।
২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
এনবিআর থেকে এর খসড়া অর্থ উপদেষ্টার কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে; বৃহস্পতিবার নাগাদ অনুমোদন আসতে পারে বলে এনবিআরের আয়কর বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা অর্থ উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য রেডি করে পাঠিয়েছি। কাল হয়ত রেজাল্ট চলে আসবে। সময় বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার পজিটিভ।”
এর আগে সরকার দুই দফায় এক মাস করে বাড়িয়েছে।
সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ছিল রিটার্ন জমার শেষ সময়।
আরেক আদেশে কোম্পানির ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়িয়ে ১৫ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৫ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। কোম্পানির ক্ষেত্রে এখনই না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে।
আয়কর আইন অনুযায়ী, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার রিটার্ন জমা শেষ সময় ৩০ নভেম্বর।
বোর্ড চাইলে এরপর একক সিদ্ধান্তেই আরও এক মাস সময় বাড়াতে পারে।
তবে অতিমারিসহ নানা সংকটকালীন সময়ে সরকার আদেশের মাধ্যমে চাইলে সময় বাড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে বোর্ড নিজ থেকে পারে না। বরং সরকারের অনুমোদনের মাধ্যমে আদেশ জারি করতে পারে।
এ বছর জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন বিবেচনায় বারবার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার ৯৩৭টি; এর মধ্যে অনলাইনে জমা পড়েছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫২টি। এর মাধ্যমে কর আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৯ কোটি টাকা।
গত করবর্ষে আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছিল ৪৩ লাখের বেশি।
এ বছর এনবিআরের বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে অবস্থিত সব সরকারি কর্মচারী, সারাদেশের সব তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সারাদেশের সব মোবাইল টেলিকম সেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিলে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিধান অনুযায়ী, বছরে আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হলে আয়কর প্রযোজ্য হয়। ব্যাংক হিসাব খোলা, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারসহ বেশ কিছু কাজে এখন রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রিটার্ন জমা দিলে ব্যাংকে সঞ্চয়ে সুদ বা মুনাফা এবং পুঁজিবাজারে লভ্যাংশের ওপর আয়কর ১৫ শতাংশের বদলে ১০ শতাংশ হয়।