বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ২০ শতাংশ
রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি আমদানি কমায় বাণিজ্য ঘাটতির নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে; চলতি অর্থবছরে পাঁচ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার বা ২০ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক লেনদেনে ভারসাম্যের (বিওপি-ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে ঘাটতি কমেছে ২০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
হালনাগাদ তথ্য বলছে, এ সময়ে চলতি হিসাবেও ঘাটতি কমে ২২৬ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। আগের অর্থবছর একই সময়ে যা ছিল ৩ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। এ সময়ে মোট রপ্তানি হয় ১৮ দশমিক ১২ বিলিয়নের ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ১৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।
অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিটেন্সের প্রবাহ ও রপ্তানি বাড়ায় চলতি হিসাব আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কারণ গত কয়েক মাস ধরেই প্রতি মাসেও দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিটেন্স আসছে। এতে ডলার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় লেনদেন ভারসাম্যের চলতি হিসাবে উন্নতি হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ঘাটতি কমে আসার এ চিত্র অর্থনীতির জন্য স্বস্তির। আমদানির এলসি খুলতেও বাংলাদেশ ব্যাংক কড়াকড়ি কমিয়েছে। কারণ ডলার সংকট আগের চেয়ে অনেক কমেছে।
তিনি মনে করেন, মূলত ডলারের দর ও দেশের ওপর আস্থা বাড়ার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার আসছে বেশি। তাতে বিওপিতেও এক ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
তবে চলতি ও আর্থিক হিসাবে সামান্য উন্নতি হলেও বিওপিতে প্রশ্ন ও উদ্বেগ রয়েছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, ডলার ব্যয় যতুটুক হওয়ার কথা হিসাব বলছে এর চাইতে বেশি হয়েছে। অর্থাৎ দেশ থেকে হিসাবের চাইতে বেশি ডলার বাইরে চলে গেছে। সেই ডলার কোথায় গেছে তা সুনির্দিষ্ট নয়।
চলতি অর্থবছর প্রথম পাঁচ মাসে ’এরোরস অ্যান্ড অমিশনসে’ ঘাটতি ১ দশমিক ৮৩ দশমিক বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ২০৭ মিলিয়ন ডলার।
জাহিদ হোসেন মনে করছেন, এই পরিমাণ অর্থের হিসাব নেই।
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এই ধোঁয়াশা পরিষ্কার করা। কারণ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস আগের সরকার থাকার পরও বর্তমান সরকারের সময়ও এটা কেন হচ্ছে সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই, যা দ্রুত দেওয়া উচিত।”