মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, কার্তিক ৭ ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ব্রেকিং

বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান: পদ ছাড়তে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ দফা জনগণ যেন কুয়াশার মধ্যে আছে: রিজভী নভেম্বরে সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন নয়, ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা বন্ধ বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ,আশুলিয়ায় দুদিনের বিক্ষোভে ভোগান্তি চরমে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুল শুনানি ৩০ অক্টোবর বিশ্ব ইজতেমা আগামী জানুয়ারিতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আন্দোলনে নিহতদের পরিবার-আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে রুল পর্যটন দ্বীপ মনপুরাকে রক্ষায় ১ হাজার ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ ‘নাশতা নিয়ে হইচই করায়’ অব্যাহতি ২৫২ জন ক্যাডেট এসআইকে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার পথে এক ধাপ এগোল জামায়াত ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৫৭ বাংলাদেশি

অর্থনীতি

তারল্য সংকট মেটাতে ৬ ব্যাংক পেল ১৬০০ কোটি টাকা

 প্রকাশিত: ১৩:২৫, ২০ অক্টোবর ২০২৪

তারল্য সংকট মেটাতে ৬ ব্যাংক পেল ১৬০০ কোটি টাকা

তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা ছয় দুর্বল ব্যাংককে মোট ১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে তুলনামূলক সবল তিন ব্যাংক।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংককে ওই তহবিল যুগিয়েছে সোনালী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার তহবিল স্থানান্তর করা হয়। এর বাইরে ইসলামী ব্যাংকও তারল্য সহায়তা চেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারী মুখপাত্র ও পরিচালক শাহরিয়ার সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়োন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব দুর্বল ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আবেদন যাচাই বাছাই করে সামনে আরও ব্যাংককে এ সহায়তা দেওয়া হবে।”

ক্ষমতার পালাবদলের পর ব্যাংক খাতের অনিয়মের চিত্র সামনে আসে। বিশেষ করে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম ইসলামী ধারার এসব ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।

যে ব্যাংকগুলো তারল্য সহায়তা পাচ্ছে, সবগুলোতে ইতোমধ্যে প্রশাসক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ছাড়া বাকি ছয়টি ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, “বেশ কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট রয়েছে। ইতোমধ্যে দশটি সবল ব্যাংক এসব দুর্বল ব্যাংককে নগদ অর্থ দিতে রাজিও হয়েছে। তাতে আশা করা যায় গ্রাহকদের খালি হাতে ব্যাংক থেকে ফিরে যেতে হবে না।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলের পর আর্থিক খাতের নেতৃত্বেও পবির্তন আসে। শুরুতে ইসলামী ব্যাংককে ‘এস আলম মুক্ত’ করার দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মীরা। পরে অন্য ব্যাংকগুলোতেও আন্দোলন শুরু হয়।

আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তারলুকদারসহ ডেপুটি গভর্নর, আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ও পলিসি উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন।

বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে অগাস্টেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ইসলামী ধারার শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে অবৈধভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেন।

এরপর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে শুরু হয় তারল্য সংকট। পরিস্থিতি এমন হয় যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা ২০ হাজার টাকাই তুলতে পারছিলেন না।

এই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকেও। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকও তারল্য সংকটে পড়ে।

এ পরিস্থিতিতে গভর্নর সবল ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকের নগদ টাকা ঋণ নেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেন। এরপর সবল ১০ ব্যাংক তারল্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সম্মতি দেয়।

কে কাকে কত দিল

• ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ৩৭৫ কোটি টাকা দিয়েছে সোনালী ব্যাংক।

• সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক মোট ৩০০ কোটি টাকা পেয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ২০০ কোটি এবং ডাচ বাংলা ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা দিয়েছে।

• ইউনিয়ন ব্যাংক ১৫০ কোটি টাকা পেয়েছে সোনালী ব্যাংক থেকে।

• গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ কোটি টাকা দিয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। সোনালী ব্যাংক দিয়েছে ৭৫ কোটি টাকা।

• ন্যাশনাল ব্যাংক পেয়েছে ৩২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২২০ কোটি টাকা দিয়েছে সোনালী ব্যাংক; ১০০ কোটি টাকা দিয়েছে ডাচ বাংলা।

• এক্সিম ব্যাংক ৪০০ কোটি টাকা পেয়েছে, পুরোটাই দিয়েছে সোনালী ব্যাংক।

সবল-দুর্বল ব্যাংকের চুক্তি

ইস্টার্ন, সিটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, সোনালী, ডাচ বাংলা ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক- এই ‘সবল’ ব্যাংকগুলো দুর্বল ব্যাংকগুলোকে মোট ৪ হাজার ৬৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক নেবে ৭৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ৫০ কোটি, সোনালী ব্যাংক ৪৫০ কোটি, ডাচ বাংলা ৫০ কোটি টাকা নেওয়ার জন্য তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংককে মোট ৮০০ কোটি টাকা দেবে তিন ব্যাংক। এর মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংক ৫০ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ৫০ কোটি এবং সোনালী ব্যাংক ৭০০ কোটি টাকার যোগান দেবে।

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৯০০ কোটি টাকা নেবে। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক দেবে ৩০০ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক দেবে ৫০ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক দেবে ৪৫০ কোটি; আর ডাচ বাংলা দেবে ১০০ কোটি টাকা।

ইউনিয়ন ব্যাংক ১৫০ কোটি টাকা নেবে সোনালী ব্যাংকের কাছ থেকে।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক মোট ২৪৫ কোটি টাকা ঋণ নেবে। এর মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংক ২৫ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ২০ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা দেবে।

ন্যাশনাল ব্যাংক ৮২০ কোটি টাকা ঋণ নেবে পাঁচ ব্যাংক থেকে। চুক্তি অনুযায়ী সিটি ব্যাংকে ২০০ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ৫০ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক ৪৫০ কোটি টাকা, ডাচ বাংলা ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০ কোটি টাকা দেবে।

এক্সিম ব্যাংককে ৪০০ কোটি টাকা দেবে সোনালী ব্যাংক।