চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে সাশ্রয় ৪২০০ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্পে সাশ্রয় হচ্ছে প্রায় ৪২০০ কোটি টাকা। মূলত প্রকল্পের জন্য আলাদা করে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন না হওয়ায় এ টাকা বাঁচছে।
তবে মুদ্রার ওপিঠ রয়েছে প্রকল্পটির। ডলারের দাম বৃদ্ধিতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে আরও ১ হাজার ৪১০ কোটি টাকা।
ওয়াসার তথ্যানুযায়ী, আধুনিক স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার আওতায় নগরের হালিশহরে বসছে প্রকল্পটির মূল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। পুরো ক্যাচমেন্ট এরিয়ার কাজ শেষ হয়েছে ৬৫ শতাংশ। এরইমধ্যে সরকারের অনুমোদন পাওয়া আরও দুটি স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও একই জায়গায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ফলে একসঙ্গে তিনটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এতে পৃথকভাবে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু হয় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে।
এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পয়োঃপাইপলাইন বসানো হচ্ছে। এর মধ্যে ১৮০ কিলোমিটার অগভীর এবং ২০ কিলোমিটার গভীর পাইপলাইন। এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে ৯০ কিলোমিটার পাইপলাইন। দক্ষিণ কোরিয়ার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তায়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পটির নির্মাণকাজ পরিচালনা করছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরের প্রায় ২০ লাখ নাগরিক আধুনিক স্যুয়ারেজ সংযোগ সুবিধা পাবেন।
অন্যদিকে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, পিডব্লিউডি রেট সিডিউল পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ডিজাইনে টেকসইকরণ আনতে গিয়ে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। এর আগে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ২২০ কোটি টাকা। একইসাথে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল একনেক সভায় এই ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, স্যুয়ারেজ প্রকল্পের আরও ক্যাচমেন্ট পতেঙ্গা ও কাট্টলীর দুটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট একই জায়গায় করার সিদ্ধান্ত এসেছে। এতে পৃথকভাবে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন পড়েনি। ফলে প্রায় ৪২০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের সময় ডলারের মূল্যের চেয়ে বর্তমানে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেড়েছে।
১৯৬৩ সালে ওয়াসার সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কাজ শুরু হলেও এখনও ওয়াসা পানি সরবরাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। দীর্ঘ ৫০ বছর পর ওয়াসা স্যুয়ারেজ প্রকল্প গ্রহণ করে।