বরগুনার তালতলীতে কিশোরীকে তুলে নিয়ে `দলবদ্ধ ধর্ষণ`, মামলা গ্রহণে পুলিশের গড়িমসি

ধর্ষণ। প্রতীকী ছবি
বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক ১৬ বছর বয়সী কিশোরীকে প্রতিবেশী এক নারীর সহায়তায় অপহরণ করে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও তালতলী থানা পুলিশ মামলা নথিভুক্ত করতে গড়িমসি করছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২২ এপ্রিল রাতে নিশানাবাড়ি ইউনিয়নের এক গ্রামে এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিবেশী এক নারী ভুক্তভোগী কিশোরীকে তার মায়ের উপস্থিতিতে দূরসম্পর্কের আত্মীয় ইব্রাহিমের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরবর্তীতে, কৌশলে কিশোরীকে ফুসলিয়ে ওই নারী ইব্রাহিমের সাথে মোটরসাইকেলে করে একটি মাছের ঘেরে পাঠায়। সেখানে ইব্রাহিম ও তার চার বন্ধু মিলে কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরদিন সকালে ধর্ষিতা কিশোরীকে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়।
কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা রাতেই তালতলী থানায় বিষয়টি জানান। তবে পুলিশ তাদের সকালে আসতে বলে। কিশোরীর সন্ধান পাওয়ার পর, পরিবারের সদস্যরা পুনরায় থানায় গিয়ে বিস্তারিত ঘটনা পুলিশকে অবহিত করেন। কিন্তু ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল মামলা না নিয়ে তাদের ধর্ষণের আলামত সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইব্রাহিমের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তের সহযোগী প্রতিবেশী নারীও পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাকিল খান জানান, তিনি ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে থানায় গিয়েছিলেন। তবে অভিযুক্তের সঠিক পরিচয় না পাওয়ায় পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
তবে তালতলী থানার ওসি মো. শাহজালাল মামলা না নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। নিখোঁজের বিষয়ে একটা তথ্য পেয়েছিলাম। পরে তাদের জিডি করার জন্য ছবিসহ আসতে বলেছিলাম।" জনপ্রতিনিধি সহ ভুক্তভোগী পরিবার থানায় হাজির হলেও অভিযুক্তের সঠিক পরিচয় না পাওয়ায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগকে তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে, ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, "আমি মেয়েকে নিয়ে ইউপি সদস্য শাকিল খানসহ কয়েকবার থানায় যাই। মেয়ে বিস্তারিত ঘটনা পুলিশকে জানায়। তবে ওসি সাহেব কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমরা জিডি করতে চাইলেও নানা অজুহাত দেখায় ও ইব্রাহিমকে থানায় ডাকার কথা বলেন।"
এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং ভুক্তভোগীর পরিবার ন্যায়বিচারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।