রোববার ২৭ এপ্রিল ২০২৫, বৈশাখ ১৪ ১৪৩২, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

ব্রেকিং

জাতীয়

ত্রুটি সারাতে ৫ মিনিট, কর্মীর পৌঁছাতে সময় লাগল দেড় ঘণ্টা

ওএনপি২৪ নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ২২:০৮, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ত্রুটি সারাতে ৫ মিনিট, কর্মীর পৌঁছাতে সময় লাগল দেড় ঘণ্টা

ছোট ত্রুটি, দীর্ঘ ভোগান্তি—মেট্রোরেলে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা

ঢাকার মেট্রোরেল দৈনিক চার লাখেরও বেশি যাত্রী পরিবহন করছে—এ তথ্য বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করছে কর্তৃপক্ষ। তবে মাঝেমধ্যেই কারিগরি ত্রুটিতে চলাচল বন্ধ হলেও যাত্রীদের সময়মতো সঠিক তথ্য জানানো হয় না। এমনকি যেসব সমস্যা মাত্র ১০ মিনিটে সমাধান সম্ভব, তাও অব্যবস্থাপনার কারণে এক-দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে।

আজ শনিবার একটি ছোট কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রায় দেড় ঘণ্টা মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় স্টেশনগুলোর মাইকে ট্রেন বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও, কখন চলাচল শুরু হবে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। স্টেশনগুলোর বাইরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরাও অন্ধকারে ছিলেন।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ থাকলেও আজকের ট্রেন বন্ধের বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তাদের ফেসবুক পেজে সর্বশেষ পোস্ট ছিল ১৩ এপ্রিলের, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে স্টেশন বন্ধের ঘোষণা। ওয়েবসাইটেও আজকের ঘটনায় কোনো আপডেট ছিল না।

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা সরকারি স্কেলের তুলনায় ২.৩ গুণ বেশি বেতন পান। তবুও কারিগরি সমস্যার সময়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ কিংবা দ্রুত সমাধানে ঘাটতি রয়েছে। আজ অপারেশন বিভাগের পরিচালক নাসির উদ্দিন ও মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির নির্দিষ্ট জনসংযোগ কর্মকর্তা নেই।

পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, তিনিও ঘটনা জানতে পেরে বিদ্যুৎ বিভাগকে যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।

ঘটনার বিবরণ:
আজ বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বিজয় সরণি সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে পুরো মেট্রো লাইনে সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত এ ধরনের ছোটখাটো সমস্যা সমাধান করতে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগে না। কিন্তু আজ তা ঠিক করতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

ডিএমটিসিএলের নীতিমতে, কারিগরি কর্মীরা শুধু উত্তরা দিয়াবাড়ী ডিপোতে অবস্থান করেন। ফলে উত্তরা থেকে বিজয় সরণি পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগে যায়। কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাত্র পাঁচ মিনিটে সমস্যার সমাধান করে। এতে বোঝা যায়, বিলম্বের মূল কারণ অব্যবস্থা এবং দুর্বল প্রস্তুতি।

মেট্রোরেল চালনায় যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাঝপথে (যেমন আগারগাঁও, শাহবাগ) জরুরি কর্মী থাকলে এমন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হতো।

বিকেলে মেট্রোরেল বন্ধের কারণে শাহবাগসহ বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হয় এবং অনেক যাত্রী টিকিট ফেরত দিয়ে স্টেশন ত্যাগ করেন। কার্ড ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট তথ্য না পেয়ে বিভ্রান্ত হন।

পরবর্তীতে জানা যায়, ৫টা ৬ মিনিটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ৬টা ২৮ মিনিটে কারিগরি কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দ্রুত মেরামতের পর সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে যাত্রীদের দুর্ভোগ এড়াতে দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করতে ডিএমটিসিএলকে আরও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।