‘ইলেকশন সার্ভিস কমিশন’ গঠনে কাজ শুরু করেছে ইসি

জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আদলে বাংলাদেশ ‘ইলেকশন সার্ভিস কমিশন’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আলাদা সার্ভিস গঠনের লক্ষ্যে ‘সম্ভাব্যতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নে’ সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও নির্বাচন কমিশন-ইসি কর্মকর্তাদের দাবির মধ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নে এ সংক্রান্ত কমিটি বুধবার প্রথম বৈঠক করেছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কমিটি কাজ শুরু করেছে। আজ প্রথম সভা করলাম। এ ধরনের সার্ভিস গঠনে আইনি রূপ দিতে অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত করতে হবে।”
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে সুপারিশ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবনা তৈরির পর কমিটি নির্বাচন কমিশনে তা উপস্থাপন করবে। কমিশনের অনুমোদন পেলে সরকারের কাছে অধ্যাদেশের জন্য পাঠানো হবে।
পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা সরকারি কর্ম কমিশনের অধীনে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়। তবে বিসিএস পরীক্ষায় নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে আলাদা ক্যাডার করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অধীনে ৫ হাজারেও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
বদিউল আলম মজুমদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রয়েছে-একটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি পৃথক সার্ভিস সৃষ্টির বিধান করা।
এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০০৯ এ সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশন সার্ভিস নামে আলাদা একটি সার্ভিস থাকবে। এই সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সচিব এবং অন্যান্য র্কমর্কতা নিয়োগ দেওয়া হবে।
সেখানে বলা হয়েছে, তবে শর্ত থাকে যে, এ বিধিতে সচিব ও অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরকারের অন্য বিভাগ থেকে নিয়োগ দেওয়ার বিধান রহিত থাকবে। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা পাওয়া না গেলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।
এই সংশোধনী প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দায়িত্ব দফা ৪ এ যুক্ত হবে, বলেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মনির হোসেন বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা সার্ভিস কমিশন গঠনের দাবি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে অতীতেও নানা পক্ষ থেকে সুপারিশ এলেও তা আর এগোয়নি।
“নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রয়েছে। বর্তমান ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্বিতীয় কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম-কমিশনের আদলে ইলেকশন সার্ভিস কমিশন গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে।”
তারই ধারাবাহিকতায় এ বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নে ১৬ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজকে সভাপতি করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় তিনি তুলে ধরেন।