বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তায় আসছে ‘হটলাইন’

ঢাকায় পুলিশের সঙ্গে সোমবার বিডার বৈঠক হয়। সেখানে বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘হটলাইন’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
এ হটলাইনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলো যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সরাসরি পুলিশের সহায়তা চাইতে পারবে।
সোমবার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়।
সেখানে এ হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি গাজা হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের সময় যেসব বিদেশি কোম্পানিতে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে, সেগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারাও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছিল— নেসলে বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা সু কোম্পানি, রেকিট বেনকিজার, পেপসিকো ও জুবিল্যান্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশ।
গত ৭ ও ৮ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন শহরে এসব প্রতিষ্ঠানের স্থাপনায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এক ডজনের বেশি মামলা হয়েছে।
বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “আইজিপি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমাদের বিডা টিম ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে একত্রে বসেছে— এটা শুধু সময়োপযোগী নয়, বরং একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।”
তিনি বলেন, “এটি নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং একটি শক্ত বার্তা—বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের পাশে আছে এবং সংকটে তাদের সঙ্গে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
“এসব কোম্পানি হাজারো মানুষের জীবিকা ও পরিবারের ভরণপোষণে সরাসরি ভূমিকা রাখে। প্রতিবাদের অধিকার থাকলেও কর্মসংস্থান, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির সুযোগ ধ্বংস করা গ্রহণযোগ্য নয়।”
পুলিশের সঙ্গে সোমবার বিডার বৈঠক হয়। সেখানে বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা ক্ষয়ক্ষতি ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “শুধু প্রতিক্রিয়ার জন্য নয়, আমরা এখানে এসেছি আস্থা গড়ে তুলতে, যেন ভবিষ্যতে এমন কিছু আর না ঘটে।
“জরুরি হটলাইনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলো সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে এবং দ্রুত সহায়তা পাবে।
বৈঠকে বিডা, পুলিশ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা সম্মিলিতভাবে একটি প্রতিরোধমূলক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেন। এর মধ্যে রয়েছে—নতুন নিরাপত্তা প্রোটোকল, দ্রুত প্রতিক্রিয়া ইউনিট এবং সংকটকালে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, “এ সংলাপ শুধু ঘটনার পরের পদক্ষেপ নয়, বরং ভবিষ্যৎ ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য নেওয়া উদ্যোগ।
“সবচেয়ে বড় কথা, এটাই সরকারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন—আমরা বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকব, শুধু উন্নয়নের সময় নয়, সংকটকালেও।”
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও বিডার সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।