শেখ হাসিনাসহ ১২ পলাতক নেতার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ

বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন পলাতক নেতার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে অভিযুক্তদের দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি যেসব দেশের সঙ্গে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে, সেই চুক্তির আওতায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন—আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
রেড নোটিশের আবেদনে শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণাদি সংযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার বিষয়ে ইন্টারপোলে আবেদন করা হয় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে এবং বেনজীরের বিষয়ে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে। অপর ১০ জনের বিষয়ে ২০২৫ সালের ১০ এপ্রিল ইন্টারপোলের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) আবেদন জমা দেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সুপারিশ পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বর্তমানে তিনটি মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ, দ্বিতীয়টি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নের অভিযোগ এবং তৃতীয়টি গত ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে।
প্রসিকিউটরদের মতে, এসব মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং আগামীকাল (রবিবার) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রেড নোটিশ প্রক্রিয়া জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হলেও সরকার আইনি পথে পলাতকদের ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।