ফু-ওয়াং ফুডসের সাবেক এমডি ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে ৭০ কোটি টাকার হিসাব গড়মিলের মামলা

৭০ কোটি টাকার হিসাব গোপনের অভিযোগে ফু-ওয়াং ফুডসের সাবেক এমডি ও তার দুই মেয়ের বিরুদ্ধে মামলায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ফু-ওয়াং ফুডসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ের বিরুদ্ধে ৭০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার হিসাব গড়মিলের অভিযোগে মামলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জাপানি বিনিয়োগকারী মিয়া মামুন এ মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বাদী নিজেই গণমাধ্যমকে জানান, গত ১৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ হেলাল উদ্দিনের আদালতে তিনি মামলাটি (মিসকেস) দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে গঠিত মিনোরি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যস্থতায় একটি পারচেজ চুক্তির মাধ্যমে আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ের কাছ থেকে ফু-ওয়াং ফুডসের ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২৬টি স্পন্সর শেয়ার কেনে।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, সাবেক এই তিন পরিচালককে সাত কর্মদিবসের মধ্যে কোম্পানির সব দায়দেনা ও আর্থিক হিসাব সংশ্লিষ্ট পক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়া চুক্তির এক ধারা অনুযায়ী এসব দায়দেনা মিনোরি বাংলাদেশের ওপর বর্তাবে না বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও চুক্তির শর্ত মানেননি তারা।
২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার মেয়েদের নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলেও তারা কোনো জবাব দেননি। ফলে বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বর্তমান এমডি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেয়ার হস্তান্তরের পর আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার মেয়েরা প্রায় ৭০ কোটি টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্সের হিসাব গোপন করেছেন এবং তা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বা অন্য কোনো পক্ষকে দেননি।
মিনোরি বাংলাদেশের আইনজীবী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আরিফ আহমেদের সময়কালে কোম্পানির বিশাল অঙ্কের টাকার খরচের কোনো স্বচ্ছতা ছিল না এবং সেই হিসাব আজও জমা দেওয়া হয়নি। আদালত যদি নির্দেশনা না দেয় বা তারা তা অমান্য করেন, তবে ভবিষ্যতে ফৌজদারি মামলা দায়েরসহ আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান এমডি মিয়া মামুন বলেন, এত বড় অঙ্কের টাকার কোনো হিসাব নেই, যার ফলে বর্তমানে কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রমেও বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ে বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনি একসময় ঢাকা-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।