বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বৈশাখ ৩ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ব্রেকিং

পাঁচ বছর সরকারে থাকার বিষয়টি জনগণের সিদ্ধান্ত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম সহনীয় হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা টিউলিপ সিদ্দিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা প্লট দুর্নীতি: এবার হাসিনার সঙ্গে জয়ের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো : তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো : তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির আজ থেকে সমুদ্রে ৫৮ দিন মাছ ধরা নিষেধ সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে হংকংয়ে ‘প্রেম’, ফেনীতে এনে বিদেশি নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে চবির মূল ফটকে তালা সায়েন্সল্যাবে পুলিশ মোতায়েন ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইসরায়েলের, দুই শর্তে হামাসের আপত্তি কথা শোনেনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, তহবিল আটকালেন ট্রাম্প সুদানের দুই বছরের যুদ্ধ শিশুদের জীবন তছনছ করে দিয়েছে : ইউনিসেফ ‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’ : মাকে বলেছিল রেজাউল

জাতীয়

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ নিয়ে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু

 প্রকাশিত: ১০:১৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ নিয়ে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু

‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।

পহেলা বৈশাখ সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে এ শোভাযাত্রা শুরু হয়।

শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

শোভাযাত্রা চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এবারের শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথি অংশ নিয়েছেন। এ বছর প্রধান ৭টি মোটিফ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে দীর্ঘসময়ের ফ্যাসিবাদী শাসনের চিত্র তুলে ধরতে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফ রাখা হয়েছে।  

বর্ষবরণে স্থান পেয়েছে  ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’

বর্ষবরণে স্থান পেয়েছে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’

বাঁশের বেত-কাঠ দিয়ে মুখাকৃতিটি তৈরির পর শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে এক দুর্বৃত্ত এটি জ্বালিয়ে দেয়। পরে ককশিটের ওপর পুনরায় এটি তৈরি করা হয়।

এবারের শোভাযাত্রায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের ‘প্রতীকী মোটিফ’ রাখার প্রাথমিক চিন্তা ছিল। তবে পরিবারের অনুরোধে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। আবু সাঈদের প্রসারিত দুইহাত না থাকলেও আনন্দ শোভাযাত্রায় স্থান পেয়েছে মুগ্ধের প্রতীকী পানির বোতল। এটি দ্বারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন দেওয়া শহীদদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।

 এছাড়াও এবারের শোভাযাত্রায় বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক বাঘ, ইলিশ মাছ, শান্তির পায়রা, পালকি রয়েছে। এ বছর ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলমানদের লড়াই সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তরমুজের ফালি মোটিফ হিসেবে রাখা হয়েছে। তরমুজ ফিলিস্তিনিদের কাছে প্রতিরোধ ও অধ্যাবসায়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

বড় মোটিফের পাশাপাশি এ বছর মাঝারি মোটিফ রয়েছে ৭টি। এর মধ্যে সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, রঙিন চরকি, তালপাতার সেপাই, তুহিন পাখি, পাখা, ঘোড়া ও লোকজ চিত্রাবলির ক্যানভাস রয়েছে।

এছাড়া ছোট মোটিফগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, বাঘের মাথা, পলো, মাছের চাই, মাথাল, লাঙল এবং মাছের ডোলা। এবারের শোভাযাত্রায় বিশেষ স্থান করে নিয়েছে বাংলার প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পটচিত্র। পট বা বস্ত্রের ওপর এই লোকচিত্র আঁকা হয়। চারুকলায় এবার ১০০ ফুট দীর্ঘ লোকজ চিত্রাবলির পটচিত্র আঁকা হয়েছে।

এবারের বর্ষবরণ অন্যবারের চেয়ে একটু আলাদা। গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটাই প্রথম বাংলা নববর্ষ উদযাপন। ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বর্ষবরণ উৎসবে মাতোয়ারা দেশবাসী। এক নতুন চেতনায় বর্ষবরণ আয়োজনের প্রচেষ্টা চলছে দেশজুড়ে।

পটচিত্রে আকবর, বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ১৯৫২ ও ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ, বেহুলা লখিন্দর, বনবিবি এবং গাজীরপট আঁকা হয়েছে। প্রত্যেকটি চিত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বাঘ এবং বাঘের রং। এর আগে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা তবে ১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এই শোভাযাত্রা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায় এই শোভাযাত্রা। তবে এবার বর্ষবরণের 'মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম বদলে রাখা হয় বর্ষবরণের ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’।