প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে কমিটি গঠন

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চূড়ান্ত পদ্ধতি নির্ধারণে প্রযুক্তিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি ‘অ্যাডভাইজারি কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রবাসীদের ভোটগ্রহণের জন্য সম্ভাব্য তিনটি পদ্ধতি— পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং ও প্রক্সি ভোটিং— বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছে ইসি। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এমআইএসটি-এর প্রযুক্তি ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কর্মশালাও আয়োজন করা হয়েছে।”
সানাউল্লাহ জানান, “আগামী দিনে আমরা এই বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি অ্যাডভাইজারি টিম গঠন করব, যারা তিনটি পদ্ধতির সফলতা, দুর্বলতা ও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ পর্যালোচনা করে বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ দেবেন। পরবর্তীতে আমরা অংশীজনদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।”
তিনি বলেন, “আমরা কোন পদ্ধতিকে এককভাবে বেছে নিচ্ছি না। বরং দেশের প্রেক্ষাপটে তিনটি পদ্ধতির সমন্বিত ব্যবস্থার দিকেই এগোতে চাই। সময়, প্রযুক্তি এবং আইনি কাঠামোর আলোকে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণই আমাদের লক্ষ্য।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে কমিশনের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে সানাউল্লাহ বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি দিনও সময় নষ্ট করছে না। তবে কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে, সেটি নির্ধারিত হবে অ্যাডভাইজারি টিমের সুপারিশ অনুযায়ী।”
তিনি আরও বলেন, “সর্বোচ্চসংখ্যক প্রবাসী ভোটারকে ভোটাধিকার দিতে চাইলে প্রক্সি ভোটিং সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে— এই অবস্থান কমিশনের আগে ছিল, এখনো আছে। তবে এই পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, তাই আরও সমন্বিত পর্যালোচনা প্রয়োজন।”
বিশ্বের ১১৫টি দেশ তাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে বলে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সবচেয়ে বেশি অনুসৃত পদ্ধতি হচ্ছে দূতাবাসে সরাসরি ভোট, তবে বাংলাদেশের প্রবাসীদের বিস্তৃতির কারণে এই পদ্ধতি সীমিত। তাই পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ও প্রক্সি ভোটিং— এই তিনটি পদ্ধতিই শর্টলিস্ট করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ইসির আয়োজিত ওই কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এমআইএসটি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সেখানে ১০টি পৃথক টিম তাদের মতামত ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে।
ইসি আশা করছে, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিগগিরই একটি কার্যকর ও নিরাপদ পদ্ধতি চূড়ান্ত করে প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনা সম্ভব হবে।