দেশে উড়োজাহাজের টিকিটের দাম বেশি কেন?

অতিরিক্ত কর, কম প্রতিযোগিতা—উড়োজাহাজ ভাড়ার মূল কারণ?
আন্তর্জাতিক রুটে বাংলাদেশ থেকে যাত্রা করতে হলে আশপাশের দেশের তুলনায় বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। টিকিট বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিযোগিতার অভাব ও অতিমুনাফার প্রবণতা এর জন্য দায়ী। অন্যদিকে, উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, বাংলাদেশে শুল্ক-কর ও বিমানবন্দরের সেবা ফি বেশি হওয়ায় পরিচালন ব্যয় বেড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, আগামী ১ মে ঢাকা থেকে ব্যাংককগামী টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য ২৩১ ডলার (প্রায় ২৮ হাজার টাকা), যেখানে একই তারিখে কলকাতা থেকে ১৬৭ ডলার ও নয়াদিল্লি থেকে ১৪০ ডলার। একইভাবে, ঢাকা থেকে জেদ্দায় সরাসরি যেতে খরচ হচ্ছে ৫৫২ ডলার (প্রায় ৬৭ হাজার টাকা), যেখানে দিল্লি থেকে একই গন্তব্যে খরচ ৩০৭ ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, ফুয়েল চার্জ ও অন্যান্য ফি আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এর ফলে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর পরিচালন ব্যয় বাড়ে এবং তার প্রভাব পড়ে টিকিটের দামে।
এ ছাড়া টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে আগে গড়ে ওঠা একটি চক্রের প্রভাব এখনো পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। কম মূল্যের টিকিট আটকে রেখে উচ্চ মূল্যে বিক্রির প্রবণতা ছিল। যদিও সরকার গত ফেব্রুয়ারিতে ১০টি নির্দেশনা জারি করে এ চর্চা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়। এর পর কিছুটা উন্নতি হলেও টিকিটের দাম এখনো তুলনামূলকভাবে বেশি।
বিমানবন্দরের একাধিপত্য, আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনগুলোর নিরুৎসাহ এবং ডলারের লেনদেনে দীর্ঘসূত্রতা—এসবই দেশের এভিয়েশন খাতকে চাপে ফেলেছে। ফলে যাত্রীপ্রতি কর, জ্বালানির মূল্য, ফি ও পরিচালন ব্যয় মিলিয়ে একেকটি আন্তর্জাতিক টিকিটে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি খরচ পড়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকিটের দাম কমাতে হলে খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও এভিয়েশন-বান্ধব করতে হবে। দেশীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বাড়াতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে হবে। তা না হলে প্রবাসী কর্মী ও যাত্রীদের ওপর এই ব্যয়ভারই চেপে বসবে।