বাটা-কেএফসিতে ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযানে পুলিশ: আইজিপি

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমে সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে কেএফসি ও বাটাসহ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে নেমেছে পুলিশ।
সোমবার দিনভর বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে এসব ঘটনার পর রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, “হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। এরইমধ্যে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আইজিপির এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন চলার মধ্যে এমন ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল থেকে এদিন দেশের অন্তত ছয় জেলায় ‘ইসরায়েলি পণ্য রাখা ও বিক্রি’ করার অভিযোগ তুলে ধরে ১৬টি রেস্তোরাঁ ও বিক্রয় কেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুরের খবর এসেছে।
কক্সবাজারে পাঁচটি, চট্টগ্রামে তিনটি, সিলেট পাঁচটি, গাজীপুরে চারটি, কুমিল্লায় একটি এবং বগুড়ায় একটি প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে রাতে আইজিপি বাহারুল আলম বিবৃতিতে বলেন, “আইনসম্মত প্রতিবাদে সরকার কখনোই বাধা দেয় না। তবে প্রতিবাদের নামে কেউ যদি অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়ায়, তা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।”
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের পাঠানো একই বিবৃতিতে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরতে যখন আমরা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছি, ঠিক তখনই দেশের কিছু মানুষের এমন নিন্দনীয় আচরণ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
“ভাঙচুরের শিকার অনেক প্রতিষ্ঠানই ছিল স্থানীয় উদ্যোক্তাদের। আবার কিছু ছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীদের - যারা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন। এসব প্রতিষ্ঠান আমাদের তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছিল। যারা এ ধরনের সহিংসতা চালিয়েছে, তারা আসলে কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও জাতীয় স্থিতিশীলতার শত্রু।”
গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের জেলায় জেলায় শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল, স্লোগান-সমাবেশ ও ধর্মঘট পালন করেন।
সকাল থেকে সারাদেশের জেলা-উপজেলা শহর ছিল প্রতিবাদমুখর। এসব বিক্ষোভের মধেই বিক্ষুব্ধ কিছু মানুষ ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটার মত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিক্রয় কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি কোমল পানীয় কোকাকোলা, সেভেন আপ রাখায় দেশি প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়।