আইনজীবী তুরিন আফরোজ গ্রেপ্তার

তুরিন আফরোজ। ফেইসবুক থেকে নেওয়া
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সাবেক কৌঁসুলি তুরিন আফরোজকে উত্তরায় তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাত ১০টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করার তথ্য দেন উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘হত্যার’ অভিযোগসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে তুরিনের বিরুদ্ধে। এইসব মামলায় তাকে উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
রাত ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক বার্তায় বলা হয়, একটি ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলায় তুরিন আফরোজকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৪ অগাস্ট মো. জব্বার নামে এক তরুণকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তুরিন আফরোজকে।
গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের সরকারপতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের আট মাসের মাথায় আইনজীবী তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল পুলিশ।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেয় প্রসিকিউটর ছিলেন আইনজীবী তুহিন আফরোজ। ওই ট্রাইব্যুনাল গঠনের তিন বছরের মাথায় প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় তিনি ভূমিকা রাখেন।
তাকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে ওই মামলা চলার মধ্যেই ২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তুরিনকে।
যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ওয়াহিদুলের সঙ্গে গোপন বৈঠকের ঘটনায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তাকে অপসারণ করে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার।
বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ওই সময়কার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তখন বলেছিলেন, তুরিন আফরোজকে অব্যাহিত দেওয়াটা ‘জরুরি’ হয়ে পড়েছিল।
গত ৫ অগাস্ট সরকার পতনের দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। সেদিন বিকালে নীলফামারীর জলঢাকায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ব্যক্তিগত কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়েছিল।