সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সায়মা ওয়াজেদ
শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের (পুতুল) বিরুদ্ধে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা করেছে। অভিযোগ অনুসারে, সূচনা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (CSR) ফান্ড থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়, যেখানে সায়মা ছিলেন ফাউন্ডেশনটির চেয়ারপারসন। এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (BAB) ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার।
২০১৪ সালে সূচনা ফাউন্ডেশন গঠিত হয় প্রতিবন্ধীদের সহায়তার উদ্দেশ্যে, এবং সায়মা ওয়াজেদকে দুই বছরের জন্য চেয়ারপারসন করা হয়। পরে তিনি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হন। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফাউন্ডেশনটির কার্যক্রম পরিচালনায় সায়মা একক কর্তৃত্বে ছিলেন।
দুদক জানায়, ২০১৬ সাল থেকে সূচনা ফাউন্ডেশন বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের CSR ফান্ড থেকে অর্থ সংগ্রহ শুরু করে। এসব তহবিল সাধারণত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো খাতে ব্যয় করার কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় CSR তহবিলের ৩০% শিক্ষা, ৩০% স্বাস্থ্য এবং ২০% দুর্যোগ ও জলবায়ু খাতে ব্যয়ের বিধান রয়েছে।
তবে ব্যাংকগুলো অভিযোগ করে, BAB-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নির্দেশে সূচনা ফাউন্ডেশনকে অর্থ দিতে বাধ্য হন তারা। এফএসআইবিএল ও আইবিবিএল ব্যাংক দুটি সর্বোচ্চ অর্থ প্রদান করে, যার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। বাকি ১৮টি ব্যাংক ৫ লাখ থেকে আড়াই কোটি টাকা পর্যন্ত দেয়। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে: ইউনিয়ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকসহ আরও অনেকে।
মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক, ২০২৫ সালের ২০ মার্চ। সায়মা ও নজরুল ইসলাম মজুমদারকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিক্ষকতার মিথ্যা দাবি করে WHO-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে আবেদন করে নির্বাচিত হন। এর ভিত্তিতেও তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে দুদক।