বকেয়া বেতন ‘পরিশোধের আশ্বাস’
রেলভবন ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার শ্রমিকদের

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ ও অন্যান্য দাবিদাওয়া নিষ্পত্তির আশ্বাসে ঢাকার রেলভবন ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা।
সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর শ্রমিকদের কাছ থেকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী রোববারের মধ্যে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। বাকী দাবিগুলোর বিষয়টি খতিয়ে দেওয়া আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এরপর শ্রমিকরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।”
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিএলআর শ্রমিক সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মোহাম্মদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন “বকেয়া বেতন পরিশোধসহ আমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। আমারা শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে আলাপ করে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে ওই সময়টা দিয়েছি। দেখি এই সময়ের মধ্যে তারা কি করে। সেটা দেখে আমরা পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।”
বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকার আবদুল গণি রোডের রেলভবনের প্রধান ফটকের সামনে পাঁচ মাসের বকেয়া বেতনের পরিশোধের দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছের কয়েকশ অস্থায়ী শ্রমিক। এ সময় তারা প্রধান ফটক অবরোধ করেন, সেখানে দাবি আদায়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
রেলভবনের প্রধান ফটক অবরোধের আগে সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এবং রেলওয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনেও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
রেলওয়ে অস্থায়ী শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় শ্রমিক প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাওন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টিএলআর কর্মচারীরা ৫ মাস বেতন পাচ্ছে না। এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে চলা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
“বারবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেও কোনো সমাধান পাইনি৷ তাই রেলভবন, রেলপথ মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।”
বেলা ১১টার দিকে রেলের নিরাপত্তার বাহিনীর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা রেলভবনের সামনে আসেন। তিনি আন্দোলনকারীদের তিনজন প্রতিনিধিকে রেলভবনে গিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য অনুরোধ জানান।
সে সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী (টিএলআর) শ্রমিক সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মোহাম্মদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ রেলওয়ে বলছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে বেতন পরিশোধ করবে। কিন্তু এর আগেও নানা ধরনের সময় দিয়েছেন। কিন্তু বেতন হয়নি।
“আমরা চাই আমাদের বেতন দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধের পাশাপাশি সৈয়দপুরে ছাঁটাই করা ১০৯ জন অস্থায়ী শ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। আর আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে রেলে চাকরি করছি তাদের কীভাবে স্থায়ী করা যায় সে ব্যবস্থা রেলপথ মন্ত্রণালয়কে করতে হবে।”
মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোহাম্মদ শাওন, ফেরদৌস, সাব্বির, লিখন নামে চারজন রেলভবনে যান।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানিয়েছেন, সেখানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম এবং রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়েছে।
“রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ এবং অন্যান্য দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি করতে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় নেন।”
শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা এই প্রস্তাব মেনে নিলে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন তারা।