বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঢাকা অযৌক্তিক বলল

আজ ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ আজ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নয়াদিল্লির সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘হস্তক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘু সম্পর্কিত বিষয়গুলো সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের গত ৭ মার্চের মন্তব্য বাংলাদেশের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এই ধরনের মন্তব্য অযৌক্তিক ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সমতুল্য।’
মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোমেসি উইংয়ের পরিচালক রফিকুল আলম বলেন, নয়াদিল্লির মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং এগুলো ‘বাস্তবতা প্রতিফলিত করে না’।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল তার সর্বশেষ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, নয়াদিল্লি ‘একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করে যেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধান করা হয়’।
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন যেখানে আপনি উল্লেখ করেছেন যে, গুরুতর অপরাধের জন্য দণ্ডিত সহিংস চরমপন্থীদের মুক্তি দেয়ার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিগুলোকে সমর্থন করে। অন্যদিকে, ঢাকা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ‘এই দৃষ্টিকোণ থেকে, বাংলাদেশ আশা করে যে, ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
আলম বলেন, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। গত মাসে নয়াদিল্লিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী মহাপরিচালক পর্যায়ের চার দিনের বৈঠক করেছে। বিজিবি তাদের প্রতিপক্ষ বিএসএফকে সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, বৈঠকে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে যৌথ পরিদর্শন ও আলোচনার ভিত্তিতে সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে উভয় পক্ষের বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা কর্মীদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার ফলে উদ্ভূত ভুল বোঝাবুঝি ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রোধে সীমান্ত নজরদারি বাড়ানোর বিষয়েও উভয় পক্ষ একমত হয়েছে।