শেখ হাসিনার শাসন দস্যু পরিবারের শাসন : ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে (১৫ বছর) প্রকৃত কোনো সরকার ছিল না, বরং তা ছিল একটি দস্যু পরিবারের শাসন। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার যেকোনো আদেশই তখন বাধ্যতামূলকভাবে পালিত হতো।
শাসনের ক্ষতি ও বিধ্বস্ত বাংলাদেশ ড. ইউনূস সাক্ষাৎকারে বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) যে ক্ষতি করেছেন তা ভয়াবহ। এটি ছিল আরেকটি গাজার মতো, তবে এখানে ভবন নয়, ধ্বংস হয়েছে প্রতিষ্ঠান, নৈতিকতা, জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। তার শাসন কোনো সরকার ছিল না, এটি ছিল দস্যু পরিবার। বসের আদেশ পেলে কাজ হতো।”
তিনি আরও বলেন, “কেউ সমস্যা করছে? তাদের গুম করে দেওয়া হতো। নির্বাচন করতে চান? আপনাকে সব আসনে জেতার নিশ্চয়তা দেওয়া হতো। টাকা চান? ব্যাংক থেকে এক মিলিয়ন ডলার ঋণ নিন, কখনো ফেরত দিতে হবে না। সরকারের সক্রিয় সহযোগিতায় ব্যাংকগুলোকে জনগণের টাকা লুটের পূর্ণ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল।”
ভারতের ভূমিকা ও আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের মতে, ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে নতুন বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালানোর সুযোগ তৈরি করছে, যা দেশকে অস্থিতিশীল করছে। তিনি বলেন, “ভারত তাকে আশ্রয় দিচ্ছে, এটা মানা যায়। তবে ভারতকে ব্যবহার করে আমরা যা যা করছি, তা নষ্ট করার প্রচারণা চালানো বিপজ্জনক। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।”
যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সরকারের পাশাপাশি ড. ইউনূসের জন্য আরেকটি বড় সমস্যা হতে পারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসা। যদিও তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে ট্রাম্প বিনিয়োগের ভালো সুযোগ দেখতে পারেন।
“ট্রাম্প একজন ডিলমেকার। আমি তাকে বলছি, আমাদের সঙ্গে চুক্তিতে আসুন। যদি তা না করেন, তাহলে বাংলাদেশ কিছুটা কষ্ট পাবে, তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থামবে না,” বলেন ড. ইউনূস।
আসন্ন নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস দাবি করেন, “দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবার, অর্থাৎ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।”