ঈদযাত্রায় স্বস্তি আনতে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ

আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রবিবার ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সড়ক পরিবহণ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ তথ্য জানান।

মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলে শিথিলতা: মহাসড়কে যানজট কমাতে মোটরসাইকেল ও দেশীয় প্রযুক্তির যানবাহন (নসিমন, করিমন) নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে হেলমেট পরিধান সাপেক্ষে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি থাকবে। হেলমেট না পরলে মোবাইল কোর্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে যেহেতু অনেকে মোটরসাইকেলেই স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারেন, তাই এতে অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপ করা হবে না।

সড়ক সংস্কার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার: ঈদের আগে ১৫ রমজানের মধ্যে মহাসড়কের সংস্কার কাজ যতটা সম্ভব সম্পন্ন করা হবে। ঢাকার গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনালে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। যাত্রী হয়রানি রোধে বিআরটিএ ও সিটি করপোরেশনকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাস মালিকপক্ষ টিকেট কালোবাজারি রোধের বিষয়ে সরকারকে আশ্বস্ত করেছে।

মহাসড়কে যানজট কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা: ঈদের সময় মহাসড়কের পাশে হাটবাজার বসানো নিষিদ্ধ করা হবে, যা জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। পদ্মা সেতুর যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৮০ কিলোমিটার করা হবে, যাতে গাড়ির চাপ কমে এবং যানজট সৃষ্টি না হয়। হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

কমিউটার ট্রেন চালু: যাত্রীচাপ সামাল দিতে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ঢাকা-নরসিংদী ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নতুন কমিউটার ট্রেন চালু করা হবে।

স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা: ঈদযাত্রায় যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে, যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

চাঁদাবাজি রোধে কঠোর নির্দেশনা: বৈঠকে উপস্থিত বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ঈদের সময় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি চাঁদাবাজির প্রমাণ উপস্থাপন করে, তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরকারের এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে এবারের ঈদযাত্রা আগের তুলনায় অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।