মাগুরার শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’, চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ‘ধর্ষণের শিকার’ শিশুটির অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ বলছে চিকিৎসরা; তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
এর আগে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
শনিবার দুপুর পৌনে একটায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাচ্চাটার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। ও গতকাল রাত থেকে ভেন্টিলেশনে আছে, ওর অবস্থা ভালো না।
“ধর্ষণের পাশাপাশি তার গলা চেপে ধরা হয়েছিল। আমরা দেখেছি তার গলায় একটা দাগ আছে। এ কারণে চিকিৎসকরা বলছেন, গলা চেপে ধরার কারণে তার শ্বাসকষ্ট হয়েছে। এ কারণে তার সমস্যাগুলো আরও বেশি হচ্ছে।”
শিশুটির চিকিৎসায় শিশু শনিবার মেডিকেল বোর্ড করা গঠনের কথা জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেছেন, ওই বোর্ডে চারটি বিভাগের চিকিৎসকরা আছেন।
“আমাদের শিশু বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এছাড়া পেডিয়াট্রিক সার্জারি, গাইনি এবং অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা আছেন। উনারা আজ মিটিংয়ে বসেছেন।”
ঢাকা মেডিকেলের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান এবং শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য মো. ছামিদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্ট্যাগুলেশন মানে গলা টিপে ধরার কারণে তাকে আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। গলা টিপে ধরার কারণেই তার সমস্যা বেশি হচ্ছে। সার্জিক্যাল সাইট অতটা খারাপ না। তার পেরিনিয়াম (যৌনাঙ্গের একটা অংশ) অত খারাপ না।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
পরিবার বলছে, শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার চিকিৎসার জন্য আনা হয় ঢাকায়।
ঢাকার আনার পর তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ)।
সেদিন চিকিৎসকদের বরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
মেয়েটির মা বলেন, ঘটনার সময় ওই বাড়িতে মেয়ে একাই ছিল। এ কারণে কে বা কারা তাকে ধর্ষণ করেছে, তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
তিনি বলেন, “মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন তাকে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
মেয়েটির শারীরিক অবস্থা ‘শঙ্কামুক্ত নয়’বলে বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছিলেন মাগুরা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ডাক্তার সুবাস রঞ্জন হালদার।
এদিকে শিশু ‘ধর্ষণের’ ঘটনায় তিনদিনেও মামলা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
এ ঘটনায় শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়াকে (৪২) আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার মাগুরা সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, “মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আটক হিটু মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। আর সজীবকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।”