‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র সভাপতি বললেন
গুমের দায় বাহিনীর নয়, ব্যক্তির

গুমের দায় সংশ্লিষ্ট বাহিনী বা প্রতিষ্ঠানের নয়, বরং ব্যক্তিগত ফৌজদারি দায়- এমনটি বলেছেন ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, গুমের ঘটনায় পুরো বাহিনীকে দায়ী করা হবে, এমন ধারণা ভুল।
এটি ব্যক্তিগত দায়, তাই কোনো বাহিনীর সদস্যদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
মঙ্গলবার (০৪ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে গুম কমিশনের সম্মেলন কক্ষে কমিশনের কার্যক্রম বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কমিশনে এ পর্যন্ত এক হাজার ৭৫২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে এক হাজার অভিযোগের প্রাথমিক যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। ২৮০ জন অভিযোগকারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৪৫ জন সদস্যের সাক্ষাৎকার রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৩০ জন গুমের শিকার ব্যক্তির বর্তমান অবস্থা অনুসন্ধান চলছে।
তিনি বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশইন করা ব্যক্তিদের তালিকা চাওয়ার পর পুলিশের কাছ থেকে ১৪০ জনের তথ্য পাওয়া গেছে, তবে এখনও কোনো গুমের শিকার ব্যক্তির সন্ধান মেলেনি। গত বছরের ডিসেম্বরের ২২ তারিখ ধামরাইয়ের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ নামে এক ব্যক্তিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর বর্ডার দিয়ে পুশইন করা হয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় অনুসন্ধান চলমান।
‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র সভাপতি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে গত আড়াই বছরে আটক এক হাজার ৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিকের তালিকা পাওয়া গেছে। সেখানে গুমের শিকার কোনো ব্যক্তি থাকলে তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ঢাকা, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ডিজিএফআই, সিটিটিসি ও র্যাবের নিয়ন্ত্রণাধীন গোপন বন্দিশালা চিহ্নিত করে সেগুলো অপরিবর্তিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা তিনটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে গুমের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্টের পর কোনো গুম হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে গুম হওয়ার বিষয়গুলো কমিশন দেখবে। এর বাইরে কমিশনের দেখার সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, সদস্য মো. নূর খান, সদস্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমদ শিবলী প্রমুখ।