স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকলে ব্যবস্থা নেবে ইউজিসি

নির্ধারিত সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেও ‘তাড়াহুড়া‘ করতে চায় না বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে সম্প্রতি একটি সভা করে ইউজিসি, যেখানে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে দ্রুত কোনো সিদ্ধান্তে যাব না।
“আগে আমরা তাদের চিঠি দিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের অগ্রগতি জানতে চাইব। তারপর কমিশনের দেওয়া সময় ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”
এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য ১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় ইউজিসি।
সে বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ, দুটির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাকি ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আলাদা আলাদা সময়সীমা দেওয়া হয়।
সময়সীমা মেনে স্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু করে কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে যারা এখনও বিভিন্ন কারণে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি, তাদের বিষয়ে নতুন করে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে দেশের উচ্চশিক্ষার এ তদারক প্রতিষ্ঠান।
ইউজিসির ২০২৩ সালের একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আশা ইউনিভার্সিটি, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে বলা হয়।
তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কমিশনে গেল বছরের শুরুর দিকে আরও সময় চেয়ে আবেদন করা হলেও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি ইউজিসি।
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, “তাদের আবেদনের বিষয়ে ইউজিসি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। “
সময় বাড়ানোর আবেদন প্রসঙ্গে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ইউজিসিতে আবেদন জানিয়েছি। তারা আমাদের দ্রুত সময়ের মধ্যেই স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে বলেছে; তবে কোনো সময়সীমা বেঁধে দেয়নি।”
ইউজিসি বিষয়টি তাদের ‘মৌখিকভাবে জানিয়েছে’ বলে দাবি করেন তিনি।
বাড়তি সময়ের আবেদন জানানো বাকি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ শীর্ষ কর্তাদের ফোন করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদের বাইরে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও স্টেট ইউনিভার্সিটিকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। স্টেট ইউনিভার্সিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাঞ্চন ব্রিজ সংলগ্ন স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেলেও মানারাত এখনও তাদের দু’টি ক্যাম্পাসে পাঠদান করছে। তাদের গুলশান ক্যাম্পাসে ইংরেজি, ইসলামিক স্টাডিজ এবং বিবিএ প্রোগামের পাঠদান চলছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী, স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে প্রতিষ্ঠার পর প্রথমে সাত বছরে এবং পরবর্তীতে আরও পাঁচ সময় পায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, “আমরা চাই, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইনের মধ্যে থেকে পরিচালিত হোক। তারা আইন মেনে তাদের সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করুক। সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগগুলো আমরা নেব।
“সম্প্রতি এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে কমিশনে একটি সভা হয়েছে। আমরা এখনও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেব না। তাদের বক্তব্য শোনার পর কমিশন সিদ্ধান্ত ঠিক করবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।”