আশুলিয়ায় স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় পৃথক স্থান থেকে স্বামী-স্ত্রীসহ তিন পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সোমবার মধ্যরাতে জামগড়া এলাকার কাঁঠালতলা মহল্লার আফাজ উদ্দিনের ভাড়া দেওয়া বাড়ি থেকে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে আশুলিয়া থানার এসআই জসিম উদ্দিন জানান।
নিহতরা হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার বড়ইতলা গ্রামের মোস্তফার ছেলে মো. শাওন এবং তার স্ত্রী একই জেলার পাথরঘাটা থানার জমাদ্দার বাড়ি গ্রামের শাহ আলম মাতব্বরের মেয়ে হাফিজা। দুজনই ‘দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড’ কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
অপরদিকে মঙ্গলবার দুপুরে খেজুর বাগান এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানা থেকে আরেক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার এসআই শামসুল হক।
নিহত মোস্তফা (৩৫) ‘রেডিয়ান্স জিন্স লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
পুলিশ জানায়, প্রায় পাঁচ মাস আগে জামগড়া এলাকার কাঁঠালতলা মহল্লার আফাজ উদ্দিনের বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন শাওন ও হাফিজা দম্পতি।
বাড়ির মালিক আফাজ উদ্দিন বলেন, “শাওন ও হাফিজার মধ্যে কখনও পারিবারিক কলহ দেখিনি। কিন্তু কী কারণে তারা আত্মহত্যা করেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”
এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে প্রথমে শাওন আত্মহত্যা করেন। তার স্ত্রী বাসায় এসে স্বামীর ঝুলন্ত লাশ দেখে খাটের উপর নামিয়ে রাখেন। পরে তিনি নিজেও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।”
এখনও তাদের কোনো আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যে কারণে তাদের ব্যাপারে কোনো তথ্য মেলেনি বলে জানান এসআই জসিম।
অপরদিকে, খেজুর বাগান এলাকার ‘রেডিয়ান্স জিন্স লিমিটেড’ কারখানার অষ্টম তলায় ফিনিশিং সেকশন থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মোস্তফার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এসআই শামসুল হক বলেন, “ওই কারখানার ভিতরে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। এরপর থেকে শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ করছেন। এখানে শিল্প-পুলিশ-১ এর একটি টিম ও সেনাবাহিনীর একটি টিম কাজ করছে।
“আমরা কারখানার বাইরে অবস্থান করছি। তবে কিভাবে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ওই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।”
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, “রাতে কারখানা বন্ধ হওয়ার পর তিনি কখন প্রবেশ করেছেন তা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে পারেনি।”
ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ওই শ্রমিকের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।