কোনো অপরাধীকে ‘বাইরে’ দেখতে চান না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
![কোনো অপরাধীকে ‘বাইরে’ দেখতে চান না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো অপরাধীকে ‘বাইরে’ দেখতে চান না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা](https://www.onp24.com/media/imgAll/2023June/Home3-2502110905.png)
অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “আমরা কোনো অপরাধীকে রাস্তায়, বাজারে, মাঠে, ময়দানে, রাজপথে দেখতে চাই না। প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হবে, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে বলব।”
মঙ্গলবার ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের উপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ক’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য রাখছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।
“সারাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতাকারী ও তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ পরিচালিত হচ্ছে।”
উপদেষ্টা জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের’ মাধ্যমে সারা দেশের অভিযানের সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করা হবে। মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপার ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানের সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করবেন।
শুক্রবার গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনার পর অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয় সরকার।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে দেশ ‘অস্থিতিশীলকারীদের’ ধরতে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট' পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী।
এ অভিযানে কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর বলেন, “আদালতের বিচারক, সরকারপক্ষের আইনজীবী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এই অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত। এছাড়া সরকার ডিএমপি এলাকায় আটজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করেছেন অপরাধীদের সামারি ট্রায়ালের জন্য।
“আইনজীবীদের আমি বলব, আপনারা আদালতে দায়েরকৃত প্রতিটি মামলায় ধার্য তারিখে উপস্থিত থাকুন। কোনোভাবেই যেন কোনো সন্ত্রাসী যেন জামিন না পায়, সতর্ক থাকুন।”
তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট, সন্ত্রাসী, মানুষদের বুকে গুলি করা হেলমেট বাহিনী, দুষ্কৃতকারী, উসকানিদাতা, জনগণের ভয়ভীতি প্রদর্শনকারী, দুর্নীতিবাজ গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে যাবে, আর তথ্যের সীমাবদ্ধতা কিংবা এজেন্সির ব্যর্থতার কারণে জামিন হয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়বে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
“আমি বিশ্বাস করি, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে বিচার বিভাগ, দক্ষ পুলিশ ও আইনজীবীদের আন্তঃসমন্বয় প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটন সম্ভব।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘প্রধান লক্ষ্য’ জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুষ্কৃতকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী এবং সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে, কিন্তু তাদের দোসররা দেশে বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।”
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “যারাই তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, সেসব বিরোধীদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে অন্যায়ভাবে মামলা-হামলা দিয়ে হেনস্তা করেছে; গণমাধ্যম দখল ও নিয়ন্ত্রণ করেছে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে শায়েস্তা করেছে।
“অনুগত পুঁজিবাদী শ্রেণি তৈরি করে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। সিভিল সার্ভিস ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে আদালতের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। বর্তমানে তারা তাদের অর্জিত অবৈধ সম্পদ ব্যবহার করে অপশক্তির সম্পৃক্ততায় নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে।”
জুলাই-অগাস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত বিশেষ হেলমেট বাহিনী, ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসর, অর্থপাচারকারী, লুণ্ঠনকারী, ষড়যন্ত্রকারী, দুষ্কৃতকারী ও দুদকের মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের পুলিশ, র্যাব, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আইনি প্রক্রিয়ায় এ সকল অপরাধীকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্রেপ্তার করেছে, এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।”