গণহত্যার আসামির জামিনে বিচারকদের ‘সতর্ক’ থাকতে বললেন আইন উপদেষ্টা
জুলাই গণহত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বের হতে পারলে বিচারকাজকেই ‘বাধাগ্রস্ত’ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, “এখানে আপনাদের রিল্যাক্স হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এটা আপনারা অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন।”
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ে মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগে আয়োজিত এক কর্মশালায় তার এমন বক্তব্য আসে।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা খুব চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছি। পুলিশ বাহিনী অনেক কষ্ট করে একটা হত্যা মামলার আসামিকে ধরে আনে, হত্যা মামলার আসামি, জুলাই গণহত্যা মামলার আসামি, সেখানে আপনাদের অবশ্যই জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
“এবং আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে এ আসামিরা বেরিয়ে এই বিচার প্রক্রিয়াটাকে কতটা বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এটা আইনের কথা। আমার বানানো কথা না।”
আসিফ নজরুল বলেন, “একটা কমন অভিযোগ থাকে পুলিশের, এটা আমি অনেক আগে থেকে শুনে আসছি যে ‘আমরা আসামি ধরে এন দিই, জাজরা ছেড়ে দেয়।’ এটা অনেক পুরনো কমপ্লেইন। আমি এটা বোধহয় ২০-৩০ বছর যাবত শুনছি।
“তো আমার একটা জিনিস শুধু, এখনকার পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, পুলিশ ভাই যারা আছেন, আপনারা এফআইআরটা একটু ডিটেইল করে লিখবেন। অনেকসময় এজহারে অনেক তথ্য থাকে না। কিন্তু আপনি এফআইআর লেখার সময়, এটা তো আপনার হাতে, আপনার তো সেই দক্ষতাটা আছে, আসামির পরিচয় যতটা জানানো যায়, জানানোর চেষ্টা করেন।”
তিনি বলেন, “বিশেষ করে যখন ফরওয়ার্ডিং দেবেন অ্যারেস্ট করার, অ্যারেস্ট করার ক্ষেত্রে ফরওয়ার্ডিং দেওয়ার তো আপনার অথরিটি আছে। ফরওয়ার্ডিং এর মধ্যে যথেষ্ট তথ্য দিয়ে আসামির ইনভলমেন্ট, আসামির পরিচয়টা ভালো করে আইডেন্টিফাই করে দিয়েন। তাহলে আমাদের বিচারকদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।”
এ সময় উপদেষ্টা বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, “আমাদের যারা জাজরা আছেন, তাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা বিগার পিকচার অব ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন, এটা মাথায় রাখবেন। আপনারা হুটহাট করে জামিন দেবেন না। জামিন পাওয়ার পরে একজন মানুষ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য যদি ভয়াবহ হয়ে ওঠেন, যদি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, যদি একই অপরাধ আবার করার চেষ্টা করেন, তাহলে সেটা জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের বিচার্য বিষয় হওয়ার কথা। আপনারা আমার থেকে ভাল জানেন।
“আবার যিনি জামিনের যোগ্য, গত আমলের মত তাকে জামিন থেকেও বঞ্চিত কইরেন না। বাট মোট কথা হচ্ছে, অভারল যে ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন, সেটা মাথার মধ্যে রাখবেন।”