সিআরআইয়ের নামে ৩৫ কোটি টাকার এফডিআর পেয়েছে দুদক
দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ
আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) নামে ব্যাংকে ৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকার এফডিআরের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ''আইএফআইসি ব্যাংকে সিআরআই নামক প্রতিষ্ঠানটির নামীয় একটি ৩৫ কোটি ২১ লক্ষ টাকার এফডিআর রয়েছে। এছাড়া সোনালী ব্যাংকে লেনদেনের তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। অভিযানকালে সংগৃহীত নথিপত্র এবং ব্যাংক হিসাবসমূহের লেনদেনের তথ্য বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।''
গণ আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সিআরআইয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান । এছাড়া মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল এর ভাইস চেয়ারম্যান। আর হাসিনার বোন শেখ রেহেনার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি সিআরআইয়ের ট্রাস্টি।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, সিআরআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ‘রাজনৈতিক এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে সহযোগিতার মাধ্যমে ‘রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতি করার’ অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের একটি দল ধানমন্ডিতে সিআরআই অফিসে অভিযানে গিয়ে সেটি বন্ধ অবস্থায় পায়।
সিআরআই-এর যেসব ব্যাংকে হিসাব চালু ছিল, অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সেসব ব্যাংক (ডাচ বাংলা, আইএফ আইসি, সোনালী ব্যাংক) থেকে তথ্যও সংগ্রহ করেন দুদকের তদন্তকারীরা।
অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ''রাষ্ট্রীয় অর্থ প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যয় বা ক্ষতি সাধন করছেন কিনা সেটার যাচাই করার জন্য এসেছি। আমরা প্রাথমিকভাবে তথ্যগুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানে আসছি।''
এর আগে গতবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সিআরআই, তাদের ইয়ং বাংলা প্রজেক্ট এবং জয়, পুতুল ও ববির ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার অবৈতনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা ছিলেন জয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। অটিজম বিশেষজ্ঞ পুতুল চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে তার কর্মস্থল ভারতের নয়াদিল্লিতে।
ববি আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো পদে না থাকলেও ‘ইয়ং বাংলা’র মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়ন ও উদ্বুদ্ধকরণের কাজ করেছেন।
তাদের পাশাপাশি শেখ হাসিনা সরকারের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়। তিনিও সিআরআইয়ের একজন ট্রাস্টি ছিলেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বহু মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি জয়, পুতুল, ববিও আসামি হয়েছেন। একাধিক মামলায় নাম আছে নসরুল হামিদেরও।