তিতুমীর শিক্ষার্থীদের রেল ও সড়ক অবরোধে ভোগান্তি চরমে
রাজধানীর মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে ঢাকা-টঙ্গী রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে আন্দোলনকারীরা মহাখালী রেলগেটে এসে রেলপথ অবরোধ করেন। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেয়। লোকোমাস্টার লতিফ বলেন, ৩টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটি কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসে। মহাখালী রেলগেটে লাল পতাকা ও শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখে দ্রুত গতি কমিয়ে ট্রেন থামাই।
এ অবস্থায় রেলওয়ে থানার ওসি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনিরাপদ হওয়ায় আপাতত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা মহাখালী-গুলশান সড়ক অবরোধ করেন। বাঁশ ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা, ফলে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।আন্দোলনকারীরা জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মানা না হবে, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের গাড়িগুলোকে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
কী চাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা?
শিক্ষার্থীরা সরকারি তিতুমীর কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে তারা আমরণ অনশন, মিছিল, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের প্রধান ৭ দফা দাবি হলো:
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা।
২. প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৩. শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা বা আবাসন খরচ বহন করা।
৪. নতুন করে ‘আইন’ ও ‘জার্নালিজম’ বিভাগ সংযোজন করা।
৫. যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা।
৬. শিক্ষার মান উন্নয়নে আসন সংখ্যা সীমিত করা।
৭. গবেষণার মান উন্নয়নে আন্তর্জাতিকমানের গবেষণাগার স্থাপন ও অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) থেকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। কলেজের সামনে এ অনশন এখনো চলছে। অনশনরত বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশাঙ্কাজনক।