স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
সোমবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী সুমনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে। বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার কফিল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি সুমনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(ক)ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে”।
“রায় ঘোষণার সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে”। দণ্ডিত সুমন (৩৫) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১০ সালে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে সুমনের সঙ্গে ভূজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের মনি আক্তারের বিয়ে হয়। তবে সুমন যে আগে একাধিক বিয়ে করেছিলেন তা তিনি মনির কাছে গোপন করেছিলেন।
এজাহারে আরও জানা যায় বিয়ের পর থেকেই সুমন তার স্ত্রীকে নির্যাতন করত। ফলে মনি আক্তার হালদা ভ্যালি চা বাগানে কাজ করে এবং নিজের আয় থেকে স্বামীকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন, সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকাও দেন।
এর পরও সুমন আরো টাকার জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন বলে জানা যায়।
২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর স্ত্রী মনি ও মামাত ভাই মো. টিপুকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান সুমন। সেখানে তিনি শ্বশুর মমতাজের কাছে যৌতুক চান।
শ্বশুর অপারগতা প্রকাশ করার পর স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ির ফেরার পথে সুমন মনিকে বেধড়ক মারধর করেন, যার ফলে তার হাত-পা ভেঙে যায় এবং মাথা ও চোখে গুরুতর আঘাত লাগে।
পরবর্তীতে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মনিকে। ২৫ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
২৭ নভেম্বর নিহতের ভাই আব্বাস বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্তে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন সুমন। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত সুমনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।