শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মাঘ ১৯ ১৪৩১, ০২ শা'বান ১৪৪৬

ব্রেকিং

বিশ্ব ইজতেমা: আখেরি মোনাজাত ‘সকাল সোয়া ৯টার মধ্যে’ অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন: একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়: প্রধান উপদেষ্টা সোশ্যাল বিজনেস ইয়ুথ সামিটে প্রধান উপদেষ্টা: তরুণরা পুরো বিশ্বকে পাল্টে দিতে পারে ফের সড়ক অবরোধে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি ‘বিশেষভাবে বিবেচনা’ করা হচ্ছে: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও বিচারবহির্ভূত হত্যা কেন, প্রশ্ন রিজভীর যুবদল নেতার মৃত্যু: ক্যাম্প কমান্ডার প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি ফ্যাসিবাদের বিচার দেশের মাটিতেই হবে : ডা. শফিকুর রহমান ইজতেমা এলাকায় রাত ১২টা থেকে গণপরিবহন বন্ধ সরকার নিজেরাও জানে না কী চায়: গয়েশ্বর তিতুমীর শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছেই এবার ফিলাডেলফিয়ায় শিশুসহ ৬ আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত

জাতীয়

রানিং স্টাফদের দাবি পূরণ ‘অর্থ বিভাগের হাতে’, আলোচনার দরজা খোলা: উপদেষ্টা

 আপডেট: ১৪:৫৩, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

রানিং স্টাফদের দাবি পূরণ ‘অর্থ বিভাগের হাতে’, আলোচনার দরজা খোলা: উপদেষ্টা

রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণের বিষয়টি নিয়ে রেল বিভাগ তাদের করণীয় করেছে। এখন বিষয়টি অর্থ বিভাগের 'হাতে রয়েছে' বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে সংকটের সুরাহায় রানিং স্টাফদের সঙ্গে যে কোনো সময় আলোচনায় ব্সতে প্রস্তুত আছেন বলেও জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা।

ফাওজুল কবির খান বলেন, “দাবি দাওয়া পূরণ রেল বিভাগের হাতে না, এটা অর্থ বিভাগের হাতে। আমরা অলরেডি অর্থ বিভাগের কাছে এটা তুলেছি। অর্থ বিভাগ এটা অনেকাংশে এটা পূরণ করে দিয়েছে। দরকার হলে আমরা বাকিটা নিয়েও তাদের সঙ্গে আলোচনা করবো।“

তিনি বলেন, “এটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে কিন্তু রেল বন্ধ করতে পারে না।”

মঙ্গলবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কথা বলছিলেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিকের দাবি পূরণ না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি; তাতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এই কর্মবিরতির কারণে সোমবার মধ্যরাতের পর ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি বলে স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।

ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। সকালে ঢাকাসহ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জায়গায় স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীদের বসে থাকার খবর জানা গেছে। তাদের অনেকে বিকল্প পথে যাত্রা শুরু করেছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন পরিচালকদের সংগঠন রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা।

“আমাদের কর্মসূচি চলছে, চলবে; যতক্ষণ না ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের সমস্যাগুলো নিরসন না করবে।”দাবিদাওয়া পূরণে মন্ত্রণালয়ের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে ফাওজুল কবির বলেন, “তাদের (রেলের রানিং স্টাফদের) দাবি বহুলাংশে পূরণ করা হয়েছে। এটা অর্থ বিভাগে আমরা এতোদিন ধরে পাঠাচ্ছিলাম। অর্থ বিভাগ সেটার জবাব দিয়েছে। কিছু দাবি আছে, এবং আরও কিছু দাবি আছে।

“গতকাল রাত পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ করেছি। তারা দশটা পর্যন্ত জানিয়েছিলেন কর্মবিরতি করবেন না আলোচনা করবেন। কিন্তু পরে জানালেন তারা কর্মবিরতি করবেন।”

যাত্রী ভোগান্তি লাঘবে রেলের রানিং স্টাফরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আলোচনায় যোগ দেবেন বলেও আশা করছেন রেলপথ উপদেষ্টা।

কর্মবিরতির কারণে বন্ধ থাকা ট্রেনের ট্রেনের যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বিআরটিসির বাসের ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

উপদেষ্টা বলেন, “যাত্রীদের ইমিডিয়েট রিলিফের জন্য বিআরটিসি বাস রেলের ভাড়ায় যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেবেন।”

ফাওজুল কবির খানের কাছে এ সময় যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেচেন টিকেট ফেরত নিয়ে তাদের অর্ধেক টাকা দেওয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, “শতভাগ টাকা দিতে হবে।“

এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন রেল সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ, বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকীর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের দাবি বহুলাংশে মেনে নেওয়া সত্ত্বেও তারা তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থেকে সরে আসেনি৷ এ কারণে আজ ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ থেকে রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে৷ রেল-এর যাত্রা বাতিল হলে পূর্বে ক্রয়কৃত টিকেটের টাকা বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক ফেরত দেবে।”

গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে ২৮ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল রানিং স্টাফরা।

গার্ড, লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার, সাব লোকো মাস্টার এবং টিটিইরা রেলের রানিং স্টাফ। এরা ট্রেন চালানোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

সারাদেশে রেলওয়েতে ১৭ শর বেশি রানিং স্টাফ কাজ করেন। দৈনিক কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে ১৫–১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। সেজন্য তাদের আগে দেওয়া হত বিশেষ আর্থিক সুবিধা, যাকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয় মাইলেজ। মাইলেজ রানিং স্টাফদের বেতনেরই অংশ।

প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক দিনের বেসিকের সমপরিমাণ টাকা অতিরিক্ত পেতেন। ৮ ঘণ্টায় এক দিনের কর্মদিবস ধরলে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে কাজ দাঁড়ায় আড়াই বা তিন মাসের সমপরিমাণ। তাদের বেতনও সেভাবেই দেওয়া হত। এ ছাড়া মূল বেতনের হিসাবে অবসরকালীন ভাতা যা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেওয়া হত।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছে।