বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, মাঘ ১৬ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬

ব্রেকিং

আড়তের দখল নিয়ে ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ-গুলি, আহত ৩০ ফের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ হচ্ছে গাছ কাটার আগে অনুমতি নিতে হবে: হাই কোর্ট দুর্বল ব্যাংক থেকে টাকা ফেরত পাবেন আমানতকারীরা: গভর্নর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ যোগ দেবেন জায়মা রহমান বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেলেন রানিং স্টাফ নেতারা, সিদ্ধান্ত হয়নি রেলের কর্মচারীদের `যৌক্তিক দাবি` আগেই মেনে নেওয়া হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা ৭ কলেজের অচলাবস্থা কাটবে কী করে, মাথায় আসছে না শিক্ষা উপদেষ্টার ইসির স্বাধীনতার গ্যারান্টি চাইলেন সিইসি সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা গাজায় ফিরেছে ২ লাখ ফিলিস্তিনি

জাতীয়

ঢাকায় রাতের সংঘর্ষের পর সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

 আপডেট: ১৫:৫৯, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

ঢাকায় রাতের সংঘর্ষের পর সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতের সংঘর্ষের পর সোমবার সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শাহবাগ, নীলক্ষেত ও নিউ মার্কেট এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান, সাঁজোয়া যান ও প্রিজনভ্যন।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজকেন্দ্রিক বিভিন্ন এলাকাতেও মোতায়েন রয়েছে বাড়তি পুলিশ সদস্য।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, “শাহবাগ, নিউ মার্কেট এলাকাকেন্দ্রিক যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে আমাদের বাড়তি প্রস্তুতি রয়েছে।”

নিউ মার্কেট থানার ওসি মোহসিন উদ্দিন বলেন, “নীলক্ষেত মোড়, নিউ মার্কেট মোড়, ঢাকা কলেজ ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে।”

রোববার রাত ১১টার দিকে নীলক্ষেত এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় চার প্লাটুন বিজিবি।

এর আগে রোববার সন্ধ্যার পর পাঁচ দাবিতে শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব ও টেকিনিক্যাল মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর সায়েন্সল্যাব মোড়ের অবরোধ থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মামুন আহমেদের বাসভবন অভিমুখে রওনা হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি তোলেন, পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রোববার বিকালে মামুন আহমেদের কাছে গেলে তিনি শিক্ষার্থীদের অপমান করেন, এজন্য তাকে ‘প্রকাশ্যে ক্ষমা’ চাইতে হবে।

মিছিলটি নীলক্ষেত মোড় হয়ে ক্যাম্পাসের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে এলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আর সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের।

পুলিশের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ তুলে তারা হামলায় জড়িত সবার বিচারের দাবিতে সোমবার সকাল ৯টা থেকে নিজ নিজ কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন।

এমন পরিস্থিতিতে সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের আজ সোমবারের সব চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের একটি ‘সরকারি বাঙলা কলেজে’ বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।

তিনি বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে, এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আশা করছি, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব।”

মহাখালীর ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ’ ঘিরে সতর্ক থাকার কথা জানিয়ে বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার বলেন, “তিতুমীর কলেজের সামনে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভেতরেই রয়েছে, আমরা বাইরে অবস্থান করছি।”

সাত কলেজের বাকি চারটি ইডেন কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অবস্থান পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েনের কথা বলছেন লালবাগ বিভাগেরর উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

তিনি বলেন, “সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গত রাতের সংঘর্ষের ঘটনার জেরে যথারীতি আমাদের আজ প্রস্তুতি রয়েছে। বাড়তি ফোর্সও মোতায়েন রয়েছে।”

সংঘর্ষে আহত ২০

এদিকে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানিয়েছেন, রোববার রাতে শিক্ষার্থীদের সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, “আহতদের মধ্যে শিক্ষার্থীসহ পথচারী ও সাংবাদিক রয়েছেন। তারা রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।”

আহতরা হলেন- রিপন চৌধুরী, ইরফান, পথচারী উজ্জল, আশরাফ, মেহেদি, ফয়সাল আহমেদ, সাদ, হৃদয়, মাহিন, ইসমাইল, ইমতিয়াজ, তোফায়েল আহমেদ (সাংবাদিক, বাংলাদেশ টাইমস), উজ্জল, ইব্রাহিম, রিশাদ, মিরাজ, আমানুল্লাহ, হিমু, সাব্বির হোসেন ও রাকিব।