বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, মাঘ ৯ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

লামাকাজী সেতু: অর্ধেক মূল্যে ইজারার সুপারিশ, নেপথ্যে কী

 প্রকাশিত: ০৯:০১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

লামাকাজী সেতু: অর্ধেক মূল্যে ইজারার সুপারিশ, নেপথ্যে কী

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সুরমা নদীর ওপর স্থাপিত লামাকাজী সেতুর টোল আদায়ের কাজ আগের বারের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দরে ইজারা দিতে সুপারিশ করা হয়েছে; যা নিয়ে পরিবহন চালক-মালিক ও শ্রমিকদের মনে ‘সন্দেহ’ তৈরি হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) তাদের এ সুপারিশ অনুযায়ী ইজারার কাজ দিলে বড় অঙ্কের রাজস্ব কমবে সরকারের।

সওজ এর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন স্বাক্ষরিত ২ ডিসেম্বরের এক প্রতিবেদনে ‘রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান লামাকাজী সেতুর’ কাজ আগের বারের চেয়ে ৪৬ দশমিক ২৫ ভাগ কমে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

তিন বছরের মেয়াদে আগেরবার প্রতিদিন এক লাখ ৩৬ হাজার ৮০১ টাকা করে ইজারাদারের কাছ থেকে টোল পেয়েছিল সওজ। এবার সেই একই মেয়াদের জন্য ৭৩ হাজার ৫২৫ টাকায় দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের জুনে তিন বছরের ইজারার মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন ইজারাদার না আসা পর্যন্ত টোল আদায় কার্যক্রম চালাচ্ছে সওজ।

কম মূল্যে ইজারা দেওয়ার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জ জেলার পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি সড়কের রানীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত ‘রানীগঞ্জ’ সেতু ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর চালু হয়। ওই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের কারণে বর্তমানে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ‘লামাকাজী’ সেতু দিয়ে দিয়ে গাড়ি চলাচল ‘কমে’ গেছে। এজন্য আগের মত টোল ‘আদায় হচ্ছে না’।

যদিও এ পথে চলাচলকারী পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, এ পথে গাড়ি কমেনি। এ কারণে ইজারার অর্থ অর্ধেকের মত কমে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুকিত মকুল ও সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম উভয়েরই অভিযোগ, এখানে ‘সমঝোতার ভিত্তিতে’ এবং সওজের কর্মকর্তারা ‘কমিশন পেতে’ কম মূল্যে ইজারার বন্দোবস্ত করছেন।

টোল আদায়ে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “আসলে আমাদের লোকজনের কাছে টোল দিতে চায় না। আসলে টোল আদায় আমাদের কাজ না। ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করতে হবে; এটাই নিয়ম।”

দুই শ্রমিক নেতা এবং এলাকাবাসী বরং এ সেতু থেকে টোল নেওয়া বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

তবে সওজ বলছে, মন্ত্রণালয় টোল বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।

অনিয়মের অভিযোগ

সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ জেলায় সড়ক পথে যাতায়াতে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী এলাকার এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এম এ খান সেতু নামে নামকরণ করা হলেও স্থানীয়ভাবে ‘লামাকাজী’ সেতু নামেই পরিচিত এটি। সুরমা নদীর উপর স্থাপিত এ সেতু সিলেট সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলা সদরকে যুক্ত করেছে।

১৯৮৪ সালে ১ জানুয়ারি চালু হওয়া এ সেতু সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের (এম এ খান) নামে করা হয়েছে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জালালপুরে জন্মগ্রহণকারী এম এ খান ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সালের জুন পর্যন্ত যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে প্রথম এ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

এ সেতুর আগে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজী এলাকায় ফেরি চলাচল ছিল। সেতুটি উদ্বোধনের প্রায় সাত মাসের মাথায় ১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট এম এ খান মারা যান। এরপর মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে লামাকাজী এলাকার সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের প্রথম সেতুর নাম এম এ খানের নামে করা হয়।

সেসময় এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল সাত কোটি টাকার মত। চার দশক ধরে এই সেতু থেকে টোল আদায় করছে সওজ।

এ সেতুর টোল আদায়ে তিন বছর পর পর ইজারাদার নিয়োগ দেয় সওজ। ২০২৪ সালের ৩০ জুন আগের চুক্তি শেষ হয়েছে। এরপর নতুন ইজারাদার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নতুন ইজারাদার না আসা পর্যন্ত টোল আদায় কার্যক্রম সওজ চালিয়ে যাচ্ছে।

সেতুর টোল আদায় এলাকায় সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, বাস-ট্রাক ও অটোরিকশাসহ আধা ঘণ্টায় অন্তত শতাধিক গাড়ি সেতু পার হয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, জুলাই থেকে সওজ নিজেই টোল আদায় করছে। বর্তমানে প্রতিদিন ঠিক কত গাড়ি যাচ্ছে এবং কত টাকা টোল উঠছে তার সঠিক হিসাব প্রকাশ করা হচ্ছে না। এখানে ‘অনিয়মের’ গন্ধ রয়েছে।

সেতুতে কথা হয় অটোরিকশা চালক কামাল মিয়ার সঙ্গে। এ সেতু দিয়ে যান চলাচল কমেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন সিলেটে যাই ট্রিপ নিয়ে। অনেক বছর ধরে সিলেট-গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক রোড়ে অটোরিকশা চালাচ্ছি।

“এটা হাস্যকর যে, রানীগঞ্জ সেতুর কারণে লামাকাজী সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল কমে গেছে। আমার কাছে মনে হয়, এখানে অন্য কিছু আছে। আর এলাকাবাসী সেতুর টোল আদায় বন্ধে অনেক দিন ধরে দাবি জানিয়েছে আসছে, সেটি না করে আবারও ইজারা দেওয়া হচ্ছে।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কিছু দিন টোল আদায় বন্ধ ছিল। এরপর থেকে টোল আদায় করে রশিদ না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন আরেক আটোরিকশা চালক আলফু মিয়া।

তার ভাষ্য, “বর্তমানে যারা টোল আদায় করছে, তারা কোনো রশিদ দিচ্ছে না। আমি একদিন রশিদের জন্য তাদের সঙ্গে তর্ক করেছি, তখন তারা বলেছে রশিদ নেই। তাহলে তাদের টোল আদায় তো অবৈধ।

“আমরা অনেকদিন ধরে দাবি জানিয়ে এসেছি টোল বাতিল করার জন্য। কিন্তু তারা বাতিল করছে না। সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার-হাজার গাড়ি চলে তাহলে কেন কমে ইজারা দেওয়া হবে।”

লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, “লামাকাজী সেতু দিয়ে প্রতিদিন গাড়ি চলাচল বেড়েই চলছে। এটি একটি হাইওয়ে সড়ক, ফলে গাড়ি চলাচল কমার কথা না।”

তার অভিযোগ, “দরপত্র সমঝোতা করে করা হচ্ছে।”

ইজারাদার নিয়োগের মূল্যায়ন প্রতিবেদন

সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ তিন বছর মেয়াদী ইজারার মেয়াদ গত ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। আগামী তিন বছরের জন্য টোল আদায়ে ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর ত্রয়োদশ বারের মত দরপত্র আহ্বান করা হয়।

এর আগে প্রথম থেকে দশমবার আহ্বান করা দরপত্রে কোনো প্রস্তাব পাওয়া যায়নি। পরের দুটিতে সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারীসহ চারটি দরপত্র পাওয়া যায়। এরপর ১৩তম দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু সেখানে কেউ দরপত্র জমা দেয়নি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২তম আহ্বানে সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স আল বোরাক ট্রেডার্স’কে ভ্যাট ও আয়করসহ সর্বমোট নয় কোটি ৭২ লাখ ২২ হাজার ২২২ টাকা মূল্যে ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এরপর তারপর সওজ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল তেজগাঁও ঢাকার নির্দেশে পুরনায় একটি জরিপ ও দরপত্র আহ্বান করতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর সিলেট সড়ক বিভাগ ১৪তম ও চূড়ান্ত আহ্বান করা হয়।

এবার দুটি দরপত্র পাওয়া যায়। এতে ‘মেসার্স মাহি এন্টারপ্রাইজ’ আট কোটি পাঁচ লাখ ১০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হয়। এ দরের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১০ শতাংশ আয়কর যুক্ত করে সর্বমোট ১০ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা হবে।

সওজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছরে মোট এক হাজার ৯৫ দিন ধরা হয়েছে। সেই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৭৩ হাজার ৫২৫ দশমিক ১১ টাকা।

আগের বারের হিসাবে যা ছিল দৈনিক এক লাখ ৩৬ হাজার ৮০১ দশমিক ৮১ টাকা।

তবে ত্রয়োদশ আহ্বানে প্রতিদিন গড়ে ৭১ হাজার ২৯ টাকা দরে অর্থাৎ গত প্রান্তিকের চেয়ে ৪৮ দশমিক ০৮ ভাগ কমে সুপারিশ করা হয়েছিল।

এদিকে চতুর্দশ বারের দরপত্রে অংশগ্রহণ না করতে পারায় দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘গফুর ব্রাদার্স’ ও ‘লিদন এন্টারপ্রাইজ’ ইজারার দরপত্র ফের আহ্বানের জন্য লিখিত আবেদন দিয়েছে।

এতে তারা বেশি দর দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে লিখেছে, এতে সরকারের রাজস্ব বাড়বে।

স্থানীয়রা টোল বন্ধ চান যে কারণে

লামাকাজী সেতুর বয়স ৪১ বছর। অনেক আগেই এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে যাওয়ার কথা। এ কারণে এখন আর টোল আদায় করা উচিত না বলে মনে করছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারাও।

উদাহরণ হিসেবে তারা বলছেন, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের উপর স্থাপিত ‘চীন মৈত্রী সেতু’ যা সাধারণ মানুষের কাছে ‘শম্ভুগঞ্জ সেতু’ নামে পরিচিত সেটি উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৯১ সালে। এর টোল আদায় শুরু হয় ১৯৯২ সালে। ৩৩ বছর ধরে সেই সেতু থেকে টোল আদায় করা হয়েছে।

গত বছরের ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর সেই সেতু থেকে টোল নেওয়া বন্ধ করা হয়। কয়েকদিন পর আবার চালু হলে জনগণের চাপে সেখান থেকে টোল আদায় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সরকারি কর্তৃপক্ষ।

সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুকিত মকুল বলেন, ৩৩ বছর টোল আদায়ের পর যদি ময়মনসিংহের চীন মৈত্রী সেতুর টোল আদায় বন্ধ করা যায়, তাহলে ৪০ বছর ধরে টোল আদায়ের পরও কেন লামাকাজী থেকে টোল আদায় করা হবে? এলাকাবাসী ও শ্রমিকরা এই সেতুর টোল আদায় বন্ধ চায়।

তিনি বলেন, “রানীগঞ্জ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন ‘অল্প’ গাড়ি চলে। ঢাকাগামী বাসগুলো সিলেট হয়ে যায়। শুধু ট্রাকগুলো রানীগঞ্জ দিয়ে চলাচল করে। প্রতিদিন লামাকাজী ব্রিজে কম হলেও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার টোল আদায় হচ্ছে।”

মুকিতের সন্দেহ, “এ বছর লামাকাজী সেতুটি কমে ইজারা দেওয়া কারণ হচ্ছে এখান থেকে কর্মকর্তারা কমিশন পাচ্ছেন, তাই তাদের ইচ্ছেমত ইজারা দিচ্ছেন। যাতে এটি চলমান থাকে।”

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, “লামাকাজী সেতুটি দিয়ে গাড়ি চলাচল আগের থেকে বেড়েছে। লামাকাজী সেতু দিয়ে প্রতিদিন টোল দেড় থেকে দুই লাখ টাকা কালেকশন হয়। তাহলে ইজারা আগের থেকে দ্বিগুণ বেশি দিয়ে দেওয়ার কথা; কমবে কেন?। আসলে সমঝেতা করে টেন্ডার করা হচ্ছে।”

কী বলছে সওজ

সিলেট সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, “যেহেতু সেটি থেকে টোল বন্ধে এলাকাবাসী আন্দোলন হয়েছিল; তাই সেতুটি টোল অপারেটরের কাছে যাওয়াই ভালো। মন্ত্রণালয় টোল বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি, চালু রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত পেয়েছি।”

এলাকাবাসী দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বরং বলেন, “সেতুটি ইজারা দিতে মানুষজন চাপ দিচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “লামাকাজীতে এখন প্রতিদিন ১ লাখ ১৫ বা ৩০ হাজার টাকা টোল আদায় হচ্ছে। তবে বর্ষা মৌসুমে এই হার আরও কমে আসে। এখন সিজন টাইম চলছে তাই বেশি টোল আদায় হচ্ছে। জুলাই মাসে কিছু দিন ৮৫ হাজার টাকা করে টোল আদায় হয়েছে।“

তবে প্রকৌশলীর এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করতে পারেননি এ পথে চলাচলকারী পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা।

তাদের ভাষ্য, জুলাই মাসে টোল কম আদায় হওয়ার কারণ হচ্ছে, তখন সারাদেশে আন্দোলন হচ্ছিল। মধ্য জুলাইয়ের পর থেকে সড়কে গাড়ি চলাচল এমনিতেই কমে গিয়েছিল। ফলে সেসময় টোল আদায় কম হবে এটাই স্বাভাবিক।

অপরদিকে বর্ষাকালে এ পথে যানবাহন কম চলাচল করে না; বরং বাড়ে। কারণ তখন প্রচুর মানুষ হাওরে যায় ভ্রমণে। টাঙ্গুয়ার হাওরকেন্দ্রিক যারা ভ্রমণে যান তারা এ পথেই যান বলে মন্তব্য এলাকাবাসীর।

এ পথে এখন কত গাড়ি চলাচল করছে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, “এটি ইজারা সেতু; যার টোল আদায় করা হয় ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায় হলে কি পরিমাণ গাড়ি চলাচল করছে সেটি বলা যেত।”

দরপত্রের জন্য পুরনায় দুটি প্রতিষ্ঠানের আবেদন প্রসঙ্গে এই প্রকৌশলী বলেন, “আমরা একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছি; এটা পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। আর আমাদের কাছে দুটি আবেদন এসেছে। তবে আবেদন দুটি একই রকম এবং ভাষায় কোনো পরিবর্তন নেই। এর আগেও আমরা এ রকম তিনটি আবেদন পেয়েছি। ওই তিনজনকে আমরা চিঠি দেওয়ার পরও তারা সাড়া দেননি। এই হিসেবে আমরা ওই দুটি আবেদনকে ফলস হিসেবে বিবেচনা করছি।”