বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, মাঘ ২ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অবাধ অপরাধে অসীম আতঙ্ক

 প্রকাশিত: ০৯:২৫, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

অবাধ অপরাধে অসীম আতঙ্ক

১০ জানুয়ারি, রাত ১০টা ৪০ মিনিট। বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ই.সি.এস কম্পিউটার সিটি (মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার) থেকে বের হন সেখানকার ব্যবসায়ী এহতেশামুল হক (৪৬)।

মার্কেটটির পশ্চিম দিকের কোণায় এলে ১৫-২০ জন দুর্বৃত্ত মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পথরোধ করে ছুরি-চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। একই সময় সমিতির সভাপতি ব্যবসায়ী মো. ওয়াহিদুল হাসান দিপু মার্কেটের নিচতলা থেকে গাড়িতে করে বের হয়ে আসার পথে ওই দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী এহতেশামুল হককে পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ধানমন্ডি শাখায় ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ ঘটনায় মো. ওয়াহিদুল হাসান দিপু বাদী হয়ে ১০ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে ডিএমপির নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে এজাহারভুক্ত এক আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তবে প্রকাশ্য রাস্তায় দুই ব্যবসায়ীর ওপর হামলার এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, চাঁদা না দেওয়ায় এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলায় এহতেশামুল হক ও ওয়াহিদুল হাসান দিপু ‘ইমন গ্রুপের সন্ত্রাসীদের’ তীব্র রোষানলে পড়েছেন। যার প্রেক্ষিতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।

মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল হাসান দিপু বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখন খুব আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও ভীত-সন্ত্রস্ত। আমাদের মার্কেটে ক্রেতা কমে গেছে। এমন একটি অদ্ভূত পরিস্থিতি থাকলে মার্কেটে ক্রেতা আসবে না। আমাকে অনেক ব্যবসায়ী ফোন করে জিজ্ঞেস করেন, কী হবে? আবার কোন মার্কেটে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়!

শুধু মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার নয়, গত কয়েক মাসে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। এসবের জের ধরে হামলা, মারধর, এমনকি খুনের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এলাকায় খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৩৯টি। অথচ এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে খুনের ঘটনা ঘটেছিল ১৬৫টি। পুলিশের এই তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে রাজধানীতে খুনের ঘটনা বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

শুধু খুন নয়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ডাকাতি, দস্যুতা, দাঙ্গা, অপহরণ, পুলিশের ওপর হামলা, চুরি ও সিঁধেল চুরির ঘটনাও বেড়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যেখানে রাজধানীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে মাত্র ৩৪টি, সেখানে ২০২৪ সালে ঘটেছে ৪১টি; ২০২৩ সালে দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে ১৯৯টি, ২০২৪ সালে ঘটেছে ২৪৮টি; ২০২৩ সালে দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে মাত্র ২০টি, ২০২৪ সালে ঘটেছে ২৩১টি; ২০২৩ সালে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৬১টি, ২০২৪ সালে ১৩২টি; ২০২৩ সালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৮৩টি, ২০২৪ ঘটেছে ৯৫টি, ২০২৩ সালে সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটেছে ৫৪৭টি, ২০২৪ সালে ঘটেছে ৬০৭টি; ২০২৩ সালে চুরির ঘটনা ঘটেছে ১৫১১টি, ২০২৪ সালে চুরির ঘটনা ঘটেছে ১৫৬৮টি।

বাসাবাড়ির পাশাপাশি চুরির ঘটনা ঘটছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিসগুলোতেও। গত ৩ জানুয়ারি দুপুরে তেমনি একটি চুরির ঘটনা ঘটে রাজধানীর অভিজাত শপিংমল বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সে। মাত্র ৮ মিনিটে ওই শপিংমলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত ‘ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স’ নামের একটি দোকানের শাটার কেটে ১৫৯ ভরি বিভিন্ন স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। চুরি যাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টাকা। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে ৫-৬ জন।

চুরি, হত্যা, ডাকাতি, দস্যুতার পাশাপাশি গত কয়েক মাসে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের মারধর ও ছুরিকাঘাতে জঘম করছে ছিনতাইকারীরা। কখনো কখনো অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ভুক্তভোগীদের প্রাণও হারাতে হচ্ছে। ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে ছিনতাইকারীর হাতে ৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

গত ১৮ নভেম্বর রাতে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন হাফেজ কামরুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে সাজেক যাওয়ার উদ্দেশে হেঁটে ওই ফ্লাইওভার পার হচ্ছিলেন। ছিনতাইকারীরা তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছিনতাইকারীরা কামরুলের বুকে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় পথচারীরা কামরুলকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের বয়স ১৬ ও ১৭ বছর। নেশার টাকা জোগাড় করতে তারা ছিনতাই করতো বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বাড়ায় আতঙ্ক বেড়েছে নগরবাসীর। অনেকটা ভয় নিয়েই বাইরে বের হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ছিনতাইকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না কেউই। বিশেষ করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, খিলগাঁও, কারওয়ান বাজার এলাকা ছিনতাইয়ের হটস্পট হয়ে উঠেছে।

রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সানজিদা শম্পা। প্রতিদিন মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোডের বাসা থেকে কারওয়ান বাজারের অফিসে যাতায়াত করতে হয় তাকে। নারী হওয়ায় প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যেই বাসায় ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। তবে মাঝে মাঝে যখন রাত বেশি হয় তখন আতঙ্ক নিয়েই ঘরে ফিরতে হয় তাকে।

বাংলানিউজকে সানজিদা শম্পা বলেন, ঢাকার দুই ব্যস্ত এবং অপরাধপ্রবণ এলাকা যদি ধরা হয় তাহলে কারওয়ান বাজার এবং মোহাম্মদপুরের নাম আসবে। এই দুই জায়গাতেই আমার যাতায়াত। কারওয়ান বাজার আমার কর্মস্থল এবং মোহাম্মদপুরে বাসা। সম্প্রতি ঢাকা শহরে যে অপরাধের হার বেড়েছে, তার হটস্পট যেন মোহাম্মদপুর। সব থেকে ভয়ের বিষয় রাত করে মাঝে মাঝে বাসায় ফেরা। একজন মেয়ে হিসেবে তো আতঙ্ক কাজ করেই, সেই সাথে রয়েছে ছিনতাইয়ের ভয়। কারওয়ান বাজার জনাকীর্ণ এলাকা হলেও মোবাইল ছিনতাইয়ের খবর রোজ পাওয়া যায়। সে কারণে রাস্তায় মোবাইল বের করাই যায় না। গুরুত্বপূর্ণ জরুরি জিনিসও নিরাপদে রাখতে হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি কমে যাওয়ায় আরও বেশি ভয় কাজ করে।

ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির (ডিআইআইটি) কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফারুক উল ইসলাম বলেন, চলাফেরা করতে গেলে আতঙ্কিত থাকতে হয়। বিশেষ করে জনমানুষহীন জায়গাগুলোতে চলতে গেলে ভয় লাগে। কখন ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়। বিশেষ করে মোহাম্মদপুরের দিকে ছিনতাই বেড়েছে। যেখানে সন্ধ্যার পরও চলাফেরা করতে পারতাম, সেখানে এখন দিনের বেলায়ও চলাফেরা করতে ভয় লাগে।

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঘাটতির কারণে রাজধানীতে অপরাধ বেড়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল‍্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বেশকিছু ঘাটতির কারণে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মাত্রা বাড়ছে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি—এই ধরনের অপরাধ যেমন বাড়ছে, তেমনি প্রকাশ্যে খুন, দখল, আধিপত্য বিস্তারের সূত্র ধরে হামলার ঘটনাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই ধরনের অপরাধ যত বাড়বে, মানুষের মধ্যে তত ভয় বাড়বে। সাধারণ মানুষ একা বের হতে ভয় পাবে, খুব সকালে অথবা সন্ধ্যা কিংবা রাতে বের হতে ভয় পাবে। মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার বিষয়ে অস্থিরতা দেখা দেবে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নতুন করে যে অপরাধমূলক তৎপরতা সেটিও নানাভাবে সাধারণ মানুষদের ভাবাচ্ছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা বড় ধরনের সংঘাতে জড়ালে অতীতেও সাধারণ মানুষ আহত-নিহত হয়েছে, বর্তমানেও সেটি দেখা যাচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেসব ঘটনার বিচার নিশ্চিতে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি আছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাছে সাধারণ মানুষের যে প্রত্যাশা, তা এই মুহূর্তে পুলিশ পূরণ করতে পারছে না। সেটি পারার অবস্থাও এই মুহূর্তে নেই। এই ঘাটতির সুযোগটাই অপরাধীরা কাজে লাগাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং সমন্বিতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে অপরাধ এবং জনমনে আতঙ্ক কমবে না বলে মনে করেন এই অপরাধ বিশেষজ্ঞ। তার মতে, পুলিশের ঘটতি পূরণ করার জন্য বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনি রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন। পাশাপাশি পুলিশের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রশ্নে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। যাতে পুলিশের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা যায়।

তবে পুলিশের মতে, নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনই সৃষ্টি হয়নি। নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ কঠোর পরিশ্রম করছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, যে ধরনের অপরাধগুলো হচ্ছে, সেগুলোর বেশিরভাগই ছোট-খাটো অপরাধ। এর বাইরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিছু অপরাধ হচ্ছে। আমরা এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট আছি। ছিনতাই সংক্রান্ত যে অপরাধগুলো আছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করি, আমরা যে কাজগুলো করছি, এর ভালো ফল শিগগিরই পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আমরা নগরবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পরিশ্রম করছে, যাতে একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় থাকে।

ছিনতাই রোধে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বাড়িয়েছে ডিএমপি। বৃদ্ধি করা হয়েছে টহল কার্যক্রম ও গোয়েন্দা নজরদারি। এর ফলে বেশকিছু ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারও করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই বাহিনী। ডিএমপির তথ্যমতে, গত অক্টোবর মাসে ৯৮ জন, নভেম্বর মাসে ১৪৮ জন, ডিসেম্বর মাসে ৫৬৪ জন ছিনতাইকারীকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসের প্রথম ১১ দিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৭৪ জন ছিনতাইকারীকে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি- দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, ক্রিমিনাল ডাটাবেইজ পর্যালোচনা করে বিভিন্ন ছিনতাই চক্রের নাম-ধাম শনাক্ত করে অভিযান চলমান রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় সোর্সের মাধ্যমে অপারেশন পরিচালনা করছে ডিবি ও থানা পুলিশ। ছিনতাই রোধে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। আশা করি, গ্রেপ্তারের মাধ্যমে যখন তারা (ছিনতাইকারী) আইনের আওতায় চলে আসবে, বিভিন্ন মামলায় ছিনতাইকারীরা কারাগারে থাকবে, তখন তাদের সংখ্যা কমে আসবে এবং আমরা এর থেকে পরিত্রাণ পাব।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী অথবা অবৈধ কোনো কাজ করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। জনগণকে একটি স্থিতিশীল ও স্বস্তিকর আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ উপহার দিতে কাজ করে যাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অবৈধ মজুতদার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশের কঠোর অবস্থান অব্যাহত রয়েছে। জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা বদ্ধপরিকর।

নগরবাসীকেও অপরাধ ও অপরাধী সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক।