বৃহস্পতিবার ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, পৌষ ২৬ ১৪৩১, ০৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সালমানের সাম্রাজ্য: কৌশলী নিয়ন্ত্রণ, ধোঁয়াশা আর ২৭৫ কোটি টাকার বিচিত্র পোর্টফোলিও

 আপডেট: ১০:৫৪, ৯ জানুয়ারি ২০২৫

সালমানের সাম্রাজ্য: কৌশলী নিয়ন্ত্রণ, ধোঁয়াশা আর ২৭৫ কোটি টাকার বিচিত্র পোর্টফোলিও

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি; তবে বিশাল এই ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের কোথায় তার অংশীদারত্ব কতটুকু, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।

গ্রুপের অনেক কোম্পানি আছে, যেখানে তার শেয়ার কেবল নামমাত্র। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে সেসব কোম্পানির পুরো নিয়ন্ত্রণ রয়ে গেছে তার এবং তার পরিবারের হাতে।

বিচিত্র কৌশলে তিনি এসব কোম্পানির পর্ষদ আর ব্যবস্থাপনায় একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখেছেন। বেক্সিমকোর নামে এমনও অনেক কোম্পানি আছে, যেগুলো মূলত শেয়ার কেনাবেচা আর ঋণ নেওয়ার জন্য খোলা হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ছয়টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটসহ এসব কোম্পানিতে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ২০২৩ সালের ৩০ জুনের বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা।

এর মধ্যে প্রায় অপরিচিত ডিজাইন স্টুডিও কিংবা বন্ধ হয়ে যাওয়া বিতর্কিত জিএমজি এয়ারলাইন্সে যেমন তার শেয়ার রয়েছে, তেমনি বিনিয়োগ রয়েছে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পারিবারিক কোম্পানি কিউসি গ্রুপের কিউসি কন্টেইনার লাইন লিমিটেডেও।

গত শতকের নব্বইয়ের দশকে শেয়ারবাজারে বিপুল কেলেঙ্কারির পর সালমান বিনিয়োগকারীদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘দরবেশ’ নামে। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এই সভাপতি শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে হয়ে ওঠেন অত্যন্ত প্রভাবশালী।

ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সেই বাস্তবতা বদলেছে। গ্রেপ্তার হয়ে সালমান আছেন কারাগারে। নানা অভিযোগে চলছে তদন্ত।

আর্থিক খাতে ‘অনিয়ম’ ও ‘ঋণ জালিয়াতি’সহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভিন্ন কোম্পানিতে তার অংশীদারত্বের রহস্যে নজর দিতে শুরু করেছে।

যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও এনবিআরের গোয়েন্দা সেলে (সিআইসি) থাকা শেয়ারের তথ্যের খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দেশি ওই ৩৮ কোম্পানিতে সালমান রহমানের মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৮৭ লাখ।

তার বড় ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমানের শেয়ার রয়েছে ৩৪ কোম্পনিতে। তার হাতে থাকা ১১ কোটি ১১ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য ওই সময়ে ছিল প্রায় ১৯৭ কোটি টাকা।

২০২৩ সালে সালমান রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমানের নামে ১৪টি কোম্পানিতে ২ কোটি ৭৭ লাখ শেয়ার থাকার তথ্য পাওয়া যায়; যার বাজারমূল্য ৩৭ কোটি টাকা। পরে ২০২৪ সালের মে মাসে তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার শেয়ার কিনে নেন। ওই সময় তার দাম ছিল ৩৮ কোটি ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা।

তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের ৩০ জুন শেয়ারের বাজারমূল্য ধরে এবং বাকি কোম্পানিতে সেসব শেয়ারের অভিহিত মূল্য ধরে বিনিয়োগের এই তথ্য উঠে এসেছে এনবিআরের সিআইসিসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে থাকা নথিতে।

অনুসন্ধানে বেক্সিমকো গ্রুপের অধীনে আরও কিছু কোম্পানি থাকার তথ্য মিলেছে। তবে আরজেএসসিতে নিবন্ধিত এসব কোম্পানির অনেকগুলোর তথ্য হালনাগাদ করা না হওয়ায় সেগুলোতে সালমানদের দুই ভাই ও অন্যদের অংশীদারত্ব কতটুকু তা স্পষ্ট নয়।

শেয়ার কম, নিয়ন্ত্রণ তাদের

বছরের পর বছর ‘ঋণ খেলাপি’ হিসেবে ও পুঁজিবাজারে ‘কারসাজির’ আলোচনায় ঘুরে ফিরে নাম আসা সালমান এফ রহমান ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা।

ক্ষমতার পালাবদলের পর সালমান, তার ভাই ও ছেলের শেয়ার ও বিনিয়োগের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে নেমে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে এনবিআরের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইসি। সেখানে বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ার ও এর বাজারমূল্যের হিসাব মেলে।

আর্থিক বছর সমাপ্ত ধরে ২০২৩ সালের জুন সময়কালের ওই হিসাব এখন হালনাগাদ করার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বেক্সিমকো গ্রুপের হর্তাকর্তা হিসেবে সালমান রহমান পরিচিতি গড়ে তুললেও একক কোম্পানিগুলোতে তার কিংবা পরিবারের সদস্যদের অংশীদারত্ব অন্য শেয়ারহোল্ডারদের চেয়ে অনেক কম। গ্রুপে তিনি ভাইস চেয়ারম্যানের পদ নিয়েছেন, ভাই সোহেল রহমান (এএসএফ রহমান) রয়েছেন চেয়ারম্যান পদে।

শেয়ারের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকসে সালমান রহমানের রয়েছে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের মাত্র একটি শেয়ার। তার ভাই সোহেল রহমানের রয়েছে দুটি। আগে সালমানের ছেলে শায়ানের একটি শেয়ার থাকলেও এখন তা নেই।

১৪ কোটি ৭০ লাখ শেয়ারের মধ্যে তাদের তিনজনের শেয়ারধারণের শতকরা হার শূন্য শতাংশের কাছাকাছি।

গ্রুপের তালিকাভুক্ত অপর দুটি কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মা এবং তালিকাভুক্ত আইএফসি ব্যাংকে তাদের বড় অঙ্কের শেয়ার থাকলেও তা অন্য শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারীদের চেয়ে অনেক কম। তবুও এসব কোম্পানিতে তাদের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ চলছে বছরের পর বছর।

আগের সরকারগুলোর সুবিধা নিয়ে তারা নিয়ন্ত্রণ করতেন এসব কোম্পানির পর্ষদ। পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ থাকায় ব্যবস্থাপনাতেও ছিল একচেটিয়া আধিপত্য। নিয়োগ থেকে বিনিয়োগ সব ধরনের সিদ্ধান্তই নিতেন তারা। বছরের পর বছর এ প্রভাব বজায় থেকেছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কিংবা অন্য যেকোনো কোম্পানিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা, নিরীক্ষক থেকে সব ধরনের নিয়োগ হত তাদের পছন্দে; যারা সবসময় তাদের যেকোনো সিদ্ধান্তকে কোম্পানির অন্য অংশীদারদের কথা না ভেবেই মেনে নিতেন।

সালমান রহমানের বিনিয়োগ

     

জুন, ’২৩ পর্যন্ত

ক্রমিক নং

কোম্পানি

শেয়ার সংখ্যা

শেয়ার মূল্য (টাকা)

বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লি.

৭,০৯,১৯,৬৯৩

১৭২,৩৯,২২,৯৫৭

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লি.

৯০,৮০,০৯৫

৩১,৯০,৫১,৮২১

বেক্সিমকো সিনথেটিকস লি.

১,৩৪,৪১,৮০০

১৩,৪৪,১৮,০০০

শাইনপুকুর সিরামিকস লি.

১০

সোনালী আঁশ লি.

২৬,৫০০

২,৬৫,০০০

এসেস এক্সপোর্টারস লি.

৯৫০

৯,৫০০

বেক্সিমকো কম্পিউটার লি.

১০০

১০,০০০

বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লি.

১০০

১০,০০০

বেক্সিমকো এগ্রো কেমিক্যালস লি.

২০০

২০,০০০

১০

আই এন্ড আই সার্ভিসেস লি.

১০

১,০০০

১১

বেক্সিমকো ফার্মা সেন্টার ফর বায়ো এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ লি.

১,০০০

১০,০০০

১২

বেক্সিমকো লজিস্টিকস লি.

৪০০

৪০,০০০

১৩

বেক্সিমকো হোল্ডিংস লি.

৫,০০,০০০

৫,০০,০০,০০০

১৪

বেক্সিমকো সার্ভিসেস লি.

৪,৯৫০

৪,৯৫,০০০

১৫

বেক্সিমকো প্রোপার্টি ডেভলপমেন্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট লি.

১০,০০০

১০,০০,০০০

১৬

আইএফআইসি ব্যাংক লি.

৩,৫৭,২৮,২৭৪

৪০,৮৩,৩২,৪২৮

১৭

শাইনপুকুর হোটেলস লি.

২৫,০০০

২৫,০০,০০০

১৮

ঢাকা স্পিনিং মিলস লি.

৭০,০০০

৭,০০,০০০

১৯

বেক্স-ম্যারু পলিয়েস্টার লি.

৩,৫০০

৩৫,০০০

২০

ইন্টারন্যাশনাল স্টিলস লি.

৪৯,৫০০

৪,৯৫,০০০

২১

ইন্টারন্যাশনাল সিমেন্ট লি.

১,০০০

১,০০,০০০

২২

কিউসি কন্টেইনার লাইন লি.

৪৮,৬৮০

৪৮,৬৮,০০০

২৩

দ্য ডিজাইন স্টুডিও লি.

৫০

৫০,০০০

২৪

সেন্ট্রাল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন লি.

৫০০

৫,০০,০০৩

২৫

সেন্ট্রাল পাওয়ার সার্ভিসেস লি.

১৫০

১৫,০০০

২৬

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন লি.

৩৯,৯৯০

৩৯,৯৯,০০০

২৭

বেক্সিমকো এস্ট্রা কোম্পানি লি.

৪৯০

৪৯,০০০

২৮

আবাহনি লি.

৫০,০০০

৫০,০০,০০০

২৯

বেক্সিমকো মাইনিং এন্ড এনার্জি করপোরেশন লি.

৫,০০০

৫,০০,০০০

৩০

বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লি.

৭৫,০০,০০০

৭,৫০,০০,০০০

৩১

রিলায়েন্স মিনারেলস এন্ড পাওয়ার লি.

৬৬,৬৬৬

৬,৬৬,৬৬০

৩২

জিএমজি এয়ারলাইনস লি.

১,১০০

১১,০০০

৩৩

বেক্সিমকো পোর্টস লি.

১০,০০০

১০,০০,০০০

৩৪

শেফার্ড কুমিল্লা ল্যান্ড পোর্ট লি.

৩০,৪০০

৩০,৪০,০০০

৩৫

এসএএল হোল্ডিংস লি.

৫,০০,০০০

৫০,০০,০০০

৩৬

বেক্সিমকো ফুডস লি.

২,০০০

২০,০০০

৩৭

ফার্স্ট আইসিবি ইউনিট ফান্ড

৯৩,৮৩১

৯,৩৮,৩১০

৩৮

রিভারসাইড হোল্ডিংস লি.

৫,০০,০০০

৫০,০০,০০০

 

সাকুল্যে

১৩,৮৭,১১,৯৩০

২৭৪,৬৬,২২,৬৮৬

 

[এরপর শুধু আইএফআইসি ব্যাংকে সালমান রহমানের শেয়ার বেড়ে ২০২৪ সালের জুলাই ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৫২ হাজার ৫৫৪টিতে দাঁড়িয়েছিল।]

নানামুখী তদন্ত শুরু, 'অর্থপাচারের' খোঁজ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সালমান রহমানকে আটকের তথ্য দেয় পুলিশ। হত্যার অভিযোগসহ একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো সাবেক এ সংসদ সদস্যকে।

‘ঋণ জালিয়াতি’, টাকা পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তে নামার কথা জানিয়েছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। অবরুদ্ধ করা হয়েছে পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব।

সরকার বদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থ সংকটে বেতন বকেয়া পড়লে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। কোম্পানিগুলো কারখানা চালু রাখতে সমস্যায় পড়ে । এক পর্যায়ে কারখানা চালু রাখতে আদালতের নির্দেশনায় নিয়োগ দেওয়া হয় রিসিভার, যাকে তত্ত্বাবধায়ক বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোহেল রহমানের বিনিয়োগ

     

জুন, ’২৩ পর্যন্ত

ক্রমিক নং

কোম্পানি

শেয়ার সংখ্যা

শেয়ার মূল্য (টাকা)

বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লি.

৬,৩২,০৪,৯৯২

১২৫,৫৯,৭৪,৯৪০

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লি.

৯,০৫৮,৮৮৮

২৩,৮৮,৭৯,৫৬৮

বেক্সিমকো সিনথেটিকস লি.

১৪,৫১৮,৪৬৭

১৪,৫১,৮৪,৬৭০

শাইনপুকুর সিরামিকস লি.

২০

সোনালী আঁশ লি.

১৮,৩৭৫

১,৮৩,৭৫০

এসেস এক্সপোর্টারস লি.

১,০০০

১০,০০০

বেক্সিমকো কম্পিউটার লি.

২০০

২০,০০০

বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লি.

১০০

১০,০০০

বেক্সিমকো এগ্রো কেমিক্যালস লি.

২০০

২০,০০০

১০

বেক্সিমকো ফার্মা সেন্টার ফর বায়ো এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ লি.

১,০০০

১০,০০০

১১

বেক্সিমকো লজিস্টিকস লি.

৪০০

৪০,০০০

১২

বেক্সিমকো হোল্ডিংস লি.

৫০০,০০০

৫,০০,০০,০০০

১৩

আইএফআইসি ব্যাংক লি.

১৫,৮৬৫,৬১৬

১৮,০৪,৫৫,৭৯৯

১৪

বেক্সিমকো সার্ভিসেস লি.

৪,৯৫০

৪,৯৫,০০০

১৫

বেক্সিমকো প্রোপার্টি ডেভলপমেন্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট লি.

১০,০০০

১,০০০,০০০

১৬

শাইনপুকুর হোটেলস লি.

২৫,০০০

২,৫০০,০০০

১৭

ঢাকা স্পিনিং মিলস লি.

৭০,০০০

৭০০,০০০

১৮

বেক্স-ম্যারু পলিয়েস্টার লি.

২,৫০০

২৫,০০০

১৯

ইন্টারন্যাশনাল স্টিলস লি.

৪৯,৫০০

৪,৯৫,০০০

২০

ইন্টারন্যাশনাল সিমেন্ট লি.

১,০০০

১০০,০০০

২১

কিউসি কন্টেইনার লাইন লি.

৪৮,৬৮০

৪৮,৬৮,০০০

২২

দ্য ডিজাইন স্টুডিও লি.

৫০

৫০,০০০

২৩

সেন্ট্রাল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন লি.

৫০০

৫০,০০০

২৪

সেন্ট্রাল পাওয়ার সার্ভিসেস লি.

১৫০

১৫,০০০

২৫

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন লি.

৪০,০০০

৪০,০০,০০০

২৬

বেক্সিমকো এস্ট্রা কোম্পানি লি.

৫১০

৫১,০০০

২৭

বেক্সিমকো মাইনিং এন্ড এনার্জি করপোরেশন লি.

৫,০০০

৫,০০,০০০

২৮

বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লি.

৭৫,০০,০০০

৭,৫০,০০,০০০

২৯

স্বাধীন বাংলা মাইনস এন্ড ইলেক্ট্রিসিটি লি.

৬৬,৬৬৬

৬,৬৬,৬৬০

৩০

জিএমজি এয়ারলাইনস লি.

১,১০০

১১,০০০

৩১

বেক্সিমকো পোর্টস লি.

১০,০০০

১০,০০,০০০

৩২

শেফার্ড কুমিল্লা ল্যান্ড পোর্ট লি.

৩০,৪০০

৩০,৪০,০০০

৩৩

ইউনাইটেড হাসপাতাল লি.

২১,৭৬৪

২১,৭৬,৪০০

৩৪

ফার্স্ট আইসিবি ইউনিট ফান্ড

৯৩,৮৩১

৯,৩৮,৩১০

 

সাকল্যে

১১,১১,৫০,৮৪১

১৯৬,৮৪,৭০,১১৭

 

 

এরই মধ্যে বেক্সিমকোর তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানিতে বড় সংখ্যায় স্বতন্ত্র পরিচালক বসানো হয়েছে।

আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছে সালমান রহমানকে; ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তার ছেলে শায়ান রহমানের অনুমোদন আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটি পর্ষদও সালমানের প্রভাবমুক্ত করা হয়েছে।

কোথায় কত শেয়ার

১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত বেক্সিমকো গ্রুপের ওয়েবসাইটে চারটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এবং ১৭টি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থাকার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কোম্পানি পরে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হলেও সে তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি।

ওয়েবসাইটে আমদানি-রপ্তানি, বস্ত্র ও পোশাক, ওষুধ, পিপিই, সিরামিকস, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন, নির্মাণ, সামুদ্রিক খাদ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মিডিয়া, আর্থিক পরিষেবা ও জ্বালানি খাতে বিভিন্ন কোম্পানি থাকার কথা বলা হয়। তবে ১৭টি কোম্পানির সবগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি; বিস্তারিত তথ্যও নেই।

এসব কোম্পানির মধ্যে কাগজে কলমে সালমান ও তার ছেলে শায়ানের সবচেয়ে কম শেয়ার রয়েছে শাইনপুকুর সিরামকসে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শাইনপুকুর সিরামিকসের স্পন্সর ও পরিচালক হিসেবে এএসএফ রহমানের নামে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের দুটি শেয়ার তথা ২০ টাকা, সালমান এফ রহমানের নামে একটি শেয়ার এবং কোম্পানির পরিচালক ও কে চৌধুরীর নামে একটি শেয়ার রয়েছে। আগে একটি শেয়ার সালমানের ছেলে শায়ান ফজলুর রহমানের নামে ছিল।

শায়ান রহমানের বিনিয়োগ

 

   

জুন, ’২৩ পর্যন্ত

ক্রমিক নং

কোম্পানি

শেয়ারের সংখ্যা

শেয়ারের মূল্য

শাইনপুকুর সিরামিকস লি.

১০

ক্রিসেন্ট ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন লি.

৯৯৯,৮০০

৯৯,৯৮০,০০০

এসকর্প এলপিজি লি.

১৪৯,৮৫০

১,৪৯৮,৫০০

এসকর্প সিলিন্ডারস লি.

৪৯,৯৫০

৪৯৯,৫০০

বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস লি.

১,০০০,০০০

১০,০০০,০০০

এসেস হোল্ডিংস লি.

৫০০,০০০

৫,০০০,০০০

বেক্সিমকো পেট্রেলিয়াম লি.

৫,০০০

৫০০,০০০

এসএফআর এস্টেটস লি.

৯৯,৮০০

৯৯৮,০০০

এসএলএল হোল্ডিংস লি.

৫০০,০০০

৫,০০০,০০০

১০

এসকর্প হোল্ডিংস লি.

২৩,৫৪১,৬৬৩

২৩৫,৪১৬,৬৩০

১১

এসএফআর হোল্ডিংস লি.

৩২৪,০০০

৩,২৪০,০০০

১২

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন লি.

১০

১,০০০

১৩

রিভারসাইড হোল্ডিংস লি.

৫০০,০০০

৫,০০০,০০০

১৪

আবাহনি লি.

৫০,০০০

৫,০০০,০০০

 

সাকূল্যে টাকা

২৭,৭২০,০৭৪

৩৭২,১৩৩,৬৪০

 

[এরপর শুধু আইএফআইসি ব্যাংকে শায়ানের শেয়ার কেনার তথ্য মেলে। সেখানে তার শেয়ার রয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজারটি; কেনার ঘোষণার দুদিনের মাথায় বাজারদর ছিল ৯ দশমিক ৯০ টাকা; অর্থ্যাৎ সে সময়ের বাজারমূল্যে শেয়ারের দাম ছিল ৩৮ কোটি ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা।]

 

শাইনপুকুর সিরামিকসের মোট শেয়ার ১৪ কোটি ৭০ লাখ। এর অর্ধেক শেয়ার রয়েছে গ্রুপের আরেক তালিকাভুক্ত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের (বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড) নামে। সেই সুবাদেই এ কোম্পানির পর্ষদে নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে চলেছে সালমান রহমানের পরিবার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজের শেয়ার সংখ্যা কমিয়ে দেখানো মূলত বড় শিল্প গ্রুপের ব্যবসায়িক কৌশল। নামের বাইরেও কোম্পানিতে থাকা অন্য শেয়ারের তালিকা দেখলে এর মূল কারণ বোঝা যায়।

বেক্সিমকো লিমিটেডের ২০২৪ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরের প্রতিবেদনে দেখা যায়, সালমান রহমানের নামে এ কোম্পানিতে ৭ কোটি ৯ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৩টি শেয়ার রয়েছে; যা মোট শেয়ারের ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

 

তার ভাই সোহেল রহমানের নামে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৪ হাজার ৯৯২টি শেয়ার (৭ দশমিক ০৮ শতাংশ) রয়েছে। এছাড়া সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে ৮ দশমিক ২২ শতাংশ এবং নমিনি পরিচালকদের হাতে রয়েছে ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার।

বেক্সিমকো লিমিটেডের সহযোগী কোম্পানির তালিকায় দেখা যায়, সেগুলোতে আবার তাদেরই বিনিয়োগ করা শাইনপুকুর সিরামিকসের বড় অংকের শেয়ার রয়েছে। এছাড়া শেয়ার রয়েছে বেক্সিমকো হোল্ডিংস, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো ইঞ্জিয়ারিং, অ্যাসেস এক্সপোর্টার্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও এসকর্প অ্যাপারেলসের নামে।

এসব কোম্পানি বেক্সিমকো গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং সবগুলোতেই সালমান রহমানের পরিবারের অংশীদারত্ব ও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ফলে এসব কোম্পানি যখন আবার বেক্সিমকো লিমিটেডে বিনিয়োগ করে এবং বেক্সিমকো লিমিটেড যখন শাইনপুকুর সিরামিকসের ৫০ শতাংশ শেয়ার নিজেদের হাতে রাখে, তখন এসব কোম্পানিতে ঘুরে ফিরে তাদের অংশীদারত্বের চিত্রই ফুটে ওঠে।

একই রকম তথ্য উঠে এসেছে বেক্সিমকো গ্রুপের আরেক তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডিংয়ে।

এতে দেখা যায়, সালমান রহমানের নামে ৯০ লাখ ৮০ হাজার ৯৫টি শেয়ার রয়েছে, যা মোট শেয়ারের কেবল ২ দশমিক ০৪ শতাংশ। সবশেষ বাজারমূল্য অনুযায়ী ওই শেয়ারের দাম ৭১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সোহেল রহমানের নামে রয়েছে ৯০ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৮টি শেয়ার; মোট শেয়ারের ২ দশমিক ০৩ শতাংশ; বাজারমূল্য বা ৭১ কোটি ১১ লাখ টাকা।

অন্যদিকে এ কোম্পানিতে ২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার ৭১৫টি শেয়ার রয়েছে বেক্সিমকো হোল্ডিংসের, বেক্সিমকো লিমিটেডের আছে প্রায় ৩২ লাখ শেয়ার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজের আছে ১ কোটি ৪৩ লাখ শেয়ার এবং বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আছে সাড়ে ৯ লাখের ওপরে শেয়ার। এই কোম্পানিগুলোও সালমানের পরিবারের নিয়ন্ত্রণাধীন।

এছাড়া ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডেও রয়েছে প্রায় ৩ শতাংশ বা প্রায় ১ কোটি সাড়ে ৪৪ লাখ শেয়ার। এ কোম্পানির বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডেও। এটিও তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকার তথ্য মিলেছে।


নিবন্ধন হয়েছে, হয়নি হালনাগাদ

আরজেএসসিতে খোঁজ নিয়ে বেক্সিমকো নামে ৩০টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া যায়।

এর মধ্যে রয়েছে বেক্সিমকো ফিশারিজ লিমিটেড, বেক্সিমকো পোর্ট লিমিটেড, বেক্সিমকো ইঞ্জিয়ারিং লিমিটেড, এসকর্প অ্যাপারেলস লিমিটেড (যা আগে বেক্সিমকো অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে ছিল), বেক্সিমকো সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও বেক্সিমকো সফটটেক লিমিটেড।

এছাড়া রয়েছে বেক্সিমকো অ্যাগ্রো কেমিক্যাল লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মা সেন্টার ফর বায়ো অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড, বেক্সিমকো অ্যাস্ট্রা কোম্পানি লিমিটেড (আগে ছিল অ্যাস্ট্রা কোম্পানি লিমিটেড), বেক্সিমকো মিডিয়া লিমিটেড, বেক্সিমকো সার্ভিসেস লিমিটেড, বেক্সিমকো লজিস্টিকস লিমিটেড, বেক্সিমকো প্রোপার্টি ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, বেক্সিমকো জেনিথ লিমিটেড, বেক্সিমকো হোল্ডিং লিমিটেড ও বেক্সিমকো কম্পিউটার লিমিটেড।

একই সঙ্গে এআরকে সি ফুডস লিমিটেড (আগে বেক্সিমকো ফুডস লিমিটেড ছিল), বেক্সিমকো মাইনিং অ্যান্ড এনার্জি করপোরেশন লিমিটেড, বেক্সিমকো পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস লিমিটেড, বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিট-২ লিমিটেড (আগের নাম ইন্ডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি ইউনিট-২ লিমিটেড), বেক্সিমকো ফার্মা এপিআই লিমিটেড রয়েছে নিবন্ধনের তালিকায়।

বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিট-১ লিমিটেড (আগের ইন্ডেক্স পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি ইউনিট-১ লিমিটেড), বেক্সিমকো ৩৬০ লিমিটেড, বেক্সিমকো অ্যাভিয়েশন লিমিটেড, বেক্সিমকো উইংস লিমিটেড, বেক্সিমকো পিপিই লিমিটেড, বেক্সিমকো আইওসি পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেড এবং বেক্সিমকো ইকুইটি লিমিটেডও এ তালিকায় রয়েছে।

এসব কোম্পানির একটিরও হালনাগাদ তথ্য মেলেনি। নিবন্ধন নবায়ন না করায় এসব কোম্পানিতে সালমান রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সবশেষ শেয়ারের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।

সিআইসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এগুলোর মধ্যে ১৪টিতে সালমান পরিবারের অন্তত তিনজনের শেয়ার থাকার তথ্য মিলেছে। তবে হালনাগাদ না করা থাকায় পরিবারটির হাতে মোট শেয়ারের কত শতাংশ রয়েছে সেই হিসাব মেলেনি।

নিজেদের নামের বাইরে ভিন্ন নামে বা বেনামে তাদের বিনিয়োগ থাকার আলোচনা থাকলেও বেক্সিমকো গ্রুপ বা সালমান রহমান সংশ্লিষ্ট আরও কত কিংবা মোট কতটি কোম্পানি রয়েছে সেটাও সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানের একক তালিকায় উঠে আসেনি।

তবে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ‘বেক্সিমকো শিল্প পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি’র প্রথম সভায় (২৮ নভেম্বর) বেক্সিমকো গ্রুপের ছোট-বড়, জানা-অজানা মিলিয়ে ১৬৯টি কোম্পানি থাকার কথা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে পোশাক খাতের ৩২টি কোম্পানি উৎপাদনে আছে।

গ্রুপের সঙ্গে এত কোম্পানির সংশ্লিষ্টতা থাকলেও এগুলোর বেশির ভাগেই সালমান পরিবারের সদস্যদের বিনিয়োগ নামমাত্র। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব কোম্পানি করা হয়েছে মূলত শেয়ার কেনাবেচা আর ঋণ নেওয়ার জন্য। যে কারণে প্রয়োজন শেষে এসব কোম্পানির বেশির ভাগের তথ্য হালনাগাদ করা জরুরি মনে করেনি মূল কোম্পানি।

ছিটকে গেছেন আইএফআইসি ব্যাংক থেকে

সালমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ২০২৪ সালের ২৭ মে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংকের ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। তিনি তখন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের পদে; আর তার বাবা সালমান দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান।

ব্যাংকটিতে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানি নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধি হিসেবে শায়ান পরিচালক নির্বাচিত হয়েছিলেন। নতুন শেয়ার কেনায় ব্যাংকের মোট শেয়ারের ২ দশমিক ১১ শতাংশ তার হাতে আসে।

জুলাই আন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদলের পর বদলে যায় সবকিছু। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় ১৩ অগাস্ট ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে বাদ যাওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যানের পদ হারান শায়ান।

অপরদিকে ৪ সেপ্টেম্বরের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক; তাতে চেয়ারম্যানের পদ হারান সালমান; যিনি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।

ব্যাংকটিতে জুলাই মাসের তথ্যে দেখা যায় সালমান রহমানের হাতে ছিল ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৫২ হাজার ৫৫৪টি শেয়ার; যা মোট শেয়ারের ২ শতাংশ।