৮ কোটি টাকার উন্নয়ন পানিতে
জামালপুরে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দেখা দেয় বিশুদ্ধ পানির সংকট। গভীর নলকূপে পর্যাপ্ত পানি না উঠায় সেই চাহিদা মেটাতে জনস্বাস্থ্যের স্থায়ী পরিকল্পনায় পৌরসভায় নির্মাণ করা হয় পানি শৌধনাগার ও ট্যাংক।
কিন্তু পৌরসভার গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতায় আজও আলো দেখেনি প্রকল্পগুলো। দীর্ঘ দিন পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে দামি যন্ত্রাংশ। পৌরসভা বলছে, পানি সরবরাহ সংযোগ কম থাকায় চালু হচ্ছে না প্রকল্পগুলো। আর বিগত মেয়রদের দোষারোপ করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নিবার্হী কর্মকর্তা।
জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরবাসীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সালে জামালপুর পৌরসভার বগাবাইদ বোর্ডঘরে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় পানি শৌধনাগার একই স্থানেই তিন কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের পানির ট্যাংক নির্মাণ করা হয়। দুই প্রকল্পই ২০২১ সালে পৌরসভার কাছে হস্তান্তরের পর কার্যত একবারের জন্যও চালু হয়নি। এতে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে দামি যন্ত্রাংশগুলো। পৌরসভার অবহেলায় এ পানির ট্যাংক ও পানি শৌধনাগার থেকে কোনো সুফল পাচ্ছে না পৌরবাসী।
মিজানুর রহমান নামে এক বাসিন্দা বলেন, ৪ বছর ধরে দেখছি এ দুটির তৈরিও কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু একবারের জন্যও চালু হয়নি। মাঝখানে উদ্বোধনও হয়েছে।
সাইফুল আলম শুভর বাড়ি বগাবাইদ বোর্ডঘর এলাকায়। দীর্ঘদিন হলো তার বাড়িতেও পানির লাইন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো সুবিধা পাচ্ছে না তার পরিবার।
তিনি বলেন, তিন চার বছর আগে আমাদের বাড়িতে পানির লাইন করে দিয়ে গেছে। কিন্তু একবারের জন্যও পানি আসেনি। সরকারের এত এত টাকা খরচ করে এটা করে লাভ কি হয়েছে। যদি না চলে।
আরেক বাসিন্দা নজরুল বলেন, মেয়র ছানুসহ আওয়ামী লীগের নেতারা শুধু টাকা মেরে খাওয়ার জন্য এমন কাজ করেছে। তা না হলে আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি সাবাই এর সুবিধা ভোগ করতে পারতাম। আমরা এ পানির ট্যাংকি ও শোধনাগার চালুর দাবি জানাচ্ছি।
জামালপুর পৌরসভা সহকারী প্রকৌশলী (পানি) মো: সাহাবুদ্দিন বলেন, পানি সাপ্লাইয়ের সংযোগ কম থাকাসহ নানা সমস্যার কারণে চালু করা যাচ্ছে না মেশিনগুলো। তাই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
তবে জামালপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, জামালপুরে বিভিন্ন সময় প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে এ পানি শোধনাগার ও পানির ট্যাংক। এ দুটি হস্তান্তরের পরও বন্ধ হয়ে পড়ে থাকার জন্য বিগত মেয়র মেয়ররাই দোষী। তাদের কয়েকবার বলার পরও এটি চালু করেনি। বর্তমানে পৌর প্রশাসককে বিষয়টি জানানো হয়েছে ।
প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ ঘন মিটার ক্ষমতা সম্পন্ন পানি শৌধনাগার এবং ৬৮০ কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পানির ট্যাংক চালু হলে প্রতিদিন দুই লাখ ২০ হাজার লিটার পানির চাহিদা মিটবে পৌরবাসীর।