দাবি আদায়ে ‘শৃঙ্খলা বহির্ভূত’ কর্মসূচি নিয়ে জনপ্রশাসনের হুঁশিয়ারি
দাবি-দাওয়া আদায়ে সরকারি কর্মচারীদের ‘শৃঙ্খলা বহির্ভূত আচরণের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার অত্যন্ত কঠোর’ বলে সতর্ক করে দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, “সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সরকারের কোনো কোনো সিদ্ধান্ত, আদেশ বা সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের আগেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরূপ মন্তব্যসহ বিবৃতি প্রকাশ করা হচ্ছে, যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার পরিপন্থি।”
৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার ‘প্রাণকেন্দ্র’ হয়ে ওঠে সচিবালয়। ধীরে ধীরে ঘনীভূত হয় সচিবালয়কেন্দ্রিক মিছিল, বিক্ষোভ ও অবরোধ। কেপিআই তালিকাভুক্ত এই অবকাঠামোর ভেতরেও নিয়মিত বিক্ষোভ করছেন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা।
এমন প্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সমাবেশ, অবস্থান ধর্মঘট, মানববন্ধন ও কলম বিরতিসহ সরকারী কর্মচারীদের সাম্প্রতিক নানা কর্মসূচির কারণে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।”
‘সরকারের সর্বস্তরে শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর ৩০ এ নম্বর বিধিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন ও বিধি যথাযথভাবে অনুসরণ সংক্রান্ত’ এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জনসেবা ও রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সরকারি কর্মচারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের সুশৃঙ্খল, দায়িত্বশীল ও পেশাদার আচরণে নির্ভর করে জনপ্রশাসনের সফলতা।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সরকারি কর্মচারী বিধিমালার যে কোনো বিধান লঙ্ঘন অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। কোনো সরকারি কর্মচারী এ বিধিমালা লঙ্ঘন করলে তিনি অসদাচরণের দায়ে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আওতায় আসবেন।
“সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা বহির্ভূত আচরণের বিষয়ে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।”
সচিবালয়ে আন্দোলন ঘিরে সবশেষ উত্তেজনা তৈরি হয় গত সপ্তাহে; উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা নিয়ে।
প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সম্ভাব্য সুপারিশের প্রতিবাদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য ক্যাডার বিলুপ্ত করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করে গত সপ্তাহে আন্দোলনে নামেন ‘বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের’ সদস্যরাও।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর এক যুগ্ম সচিবের অপসারণসহ নয় দাবিতে বিক্ষোভ করে ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ’। তারা সচিবালয়ের ভেতরে মহাসমাবেশের ঘোষণাও দিয়েছিল।