শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দিল বাংলাদেশ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা জানিয়েছি ভারতকে, তাকে (শেখ হাসিনা) যে ফেরত চাওয়া হচ্ছে সেটা বিচার ব্যবস্থার জন্য, আমরা সেটা জানিয়েছি। কূটনৈতিকপত্রের মাধ্যমে ভারত সরকারকে জানানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভারত থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর কথা জানান।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। (তাকে) এক্সট্রাডিশন (প্রত্যর্পণ) করার জন্য, এটি প্রক্রিয়াধীন।
কোন উপায়ে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের দপ্তরে আসেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেই সময় শেখ হাসিনাকে ফেরাতে চিঠি দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলো।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালান শেখ হাসিনা। তার আগে-পরে পালান সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তার দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও।
ওই অভ্যুত্থান দমনে ব্যাপক বলপ্রয়োগ করে শেখ হাসিনার সরকার। এতে সরকারি হিসাবেই প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আর আন্দোলনকারীদের হিসাবে এ সংখ্যা দেড় সহস্রাধিক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার শেখ হাসিনাসহ অভ্যুত্থানে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে। এরই মধ্যে সেই ট্রাইব্যুনালে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে।
সরকারের উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অনেক আগে থেকে বলে আসছেন, এসব মামলায় বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে ভারতের কাছে।