রোববার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, পৌষ ১ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ব্রেকিং

গ্রেপ্তার অভিযান আরো জোরদার করা হবে: আসিফ মাহমুদ দেশকে আরও উন্নত ও স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর : প্রধান উপদেষ্টা ভবিষ্যতে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা কমানো হবে: অর্থ উপদেষ্টা বেনজীর ও মতিউর পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলা ‘কয়েকজন’ বিচারপতির বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রতিবেদন রাজনৈতিক মঞ্চে সশরীরে আসছেন খালেদা জিয়া ভোট ‘চুরিতে’ জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার চায় বিএনপি মহার্ঘ্য ভাতা সব সরকারি কর্মচারী পাবেন: জনপ্রশাসন সচিব রাষ্ট্রের সংস্কার কখনো রাজনীতিবিদদের অবসর দিয়ে হয় না: রিজভী ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী নদীসহ চার জন রিমান্ডে মানহানির মামলায় এবিসি নিউজ থেকে দেড় কোটি ডলার পাচ্ছেন ট্রাম্প

জাতীয়

পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে ধস, সংস্কার নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের ঠেলাঠেলি

 প্রকাশিত: ১১:৩৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে ধস, সংস্কার নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের ঠেলাঠেলি

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড নদীরক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এক মাসের মধ্যে বাঁধের অন্তত ১০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়েছে।

তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও বাঁধের সংস্কার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) কোনো মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ করেছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তাদের কাছে এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করেননি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

অপরদিকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ায় তাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই।

দুই প্রতিষ্ঠানের এমন বক্তব্যে বিপাকে পড়েছেন ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা। ধস ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখাঁর কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ।

চলতি বছরের ৩০ জুন পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হলেও বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে হস্তান্তর করেনি সেতু কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়রা জানান, ৩ নভেম্বর বাঁধের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হঠাৎ ধস শুরু হয়। ১৬ নভেম্বর বিকাল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে গেছে। এতে কংক্রিটের সিসি ব্লকগুলো নদীতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া এলাকার আশপাশে দেখা দিয়েছে ফাটল।

এ ঘটনার পর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও বাঁধের ধস ঠেকাতে এগিয়ে আসেনি সংশ্লিষ্টরা। ধস ঠেকাতে এরই মধ্যে মাঝিরঘাট এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী।

দ্রুত পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের ধসে যাওয়া অংশের সংস্কার, নদী শাসন ও নতুন বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আতাউর রহমান খান বলেন, “পদ্মা সেতুর খুব কাছাকাছি এলাকা হওয়ায়, ভাঙনের পরে ভেবেছিলাম দ্রুত বাঁধটি সংস্কার করা হবে। কিন্তু এক মাস পার হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

“নতুন করে আবার ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট যারাই আছেন, তারা যেন দ্রুত একটা ব্যবস্থা নেন।”

বাঁধটি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মাঝিরঘাটের বাসিন্দা আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, “আমরা এখন ভাঙন আতঙ্কে আছি। সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত মেরামত করা হোক।”

ধসে পড়া স্থানটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নদী শাসনের আওতাভুক্ত বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান।

তিনি বলেন, “গত বছরের শুরুতে ওই স্থানটি ডান তীর রক্ষা বাঁধের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তখন তারা রাজি হয়নি।

“বর্তমানে আমাদের কোনো বরাদ্দ না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। বিষয়টি পরিষ্কারভাবে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।”

এদিকে ধসে পড়া স্থানটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধিগ্রহণ করা এলাকার নয় বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (নদী শাসন) মো. শারফুল ইসলাম সরকার।

তিনি বলেন, “তৎকালীন সংসদ সদস্যের (বি এম মোজাম্মেল হক) সুপারিশে প্রকল্পের বাইরেও ওই স্থানে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল। আমরা অধিগ্রহণের বাইরে নদীতে কোনো কাজ করি না, সেখানে কাজ করে পাউবো।”

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান সেতু কর্তৃপক্ষের এই কর্মকর্তা।