সোমবার ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, অগ্রাহায়ণ ১৮ ১৪৩১, ৩০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্রেকিং

পৌনে পাঁচ লাখ শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ২ মার্চ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য নেবে ইসি বিপ্লবের মূল কথাই ছিল সংস্কার, সেই সংস্কার করেই নির্বাচন: ড. ইউনূস উন্নয়ন বাজেটের ৪০ শতাংশ ‘লুটপাট’ হয়েছে: শ্বেতপত্র কমিটি বিসিএসে আবেদন ফি ‘হচ্ছে’ ৩৫০ টাকা, ভাইভায় নম্বর ১০০ আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে উগ্রপন্থীদের হামলা-ভাঙচুর পাশের দেশের মিডিয়া আমাদের নিয়ে অনেক মিথ্যা প্রচার করছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘ক্ষমতার ভারসাম্য’ আনতে সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আলোচনায় রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নতুন মামলায় গ্রেফতার ইনু, মেনন ও দীপু মনি ৪ ডিসেম্বর আমু-কামরুলকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ আদালতের শ্বেতপত্র: শুধু ব্যাংক খাতের মন্দ ঋণ দিয়ে করা যেত ২৪টি পদ্মা সেতু ১৫ আগস্ট শোক দিবস পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায় স্থগিত

জাতীয়

আওয়ামী লীগ আমলে দুর্নীতির কারণে এডিপি’র ক্ষতি ১৪-২৪ বিলিয়ন ডলার

 প্রকাশিত: ১৮:২৯, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগ আমলে দুর্নীতির কারণে এডিপি’র ক্ষতি ১৪-২৪ বিলিয়ন ডলার

গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ এবং স্ফীতি বাজেটের কারণে এডিপি এবং উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ১৪ থেকে ২৪ বিলিয়ন বা ১ লাখ ৬১ হাজার থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে এ কথা  বলা হয়েছে।

শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আজ রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। এ সময় কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহৎ আকারের সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে গড়ে ৭০ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে এবং পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিলম্ব হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের সময় তহবিলের অপব্যবহার এবং পক্ষপাতদুষ্ট প্রকল্প পরিচালকদের নিয়োগ আরো বেশি সম্পদ সংকট সৃষ্টি করেছে। যার ফলে অবকাঠামো ও সামাজিক বিনিয়োগ থেকে সম্ভাব্য সুফল হ্রাস পেয়েছে। কর ফাঁকি, কর ছাড়ের অপব্যবহার এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ থেকে বঞ্চিত করেছে, ফলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। যা বিদেশি সাহায্য এবং এফডিআই প্রবাহের সম্মিলিত মানের দ্বিগুণেরও বেশি। তদুপরি, কর ছাড় অর্ধেকে নামিয়ে আনলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ তিনগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।

গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গৃহস্থালির উৎপাদন পরিসংখ্যান বিকৃত করা এবং চাহিদা কম দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে চাল, ভোজ্য তেল এবং গমের মতো প্রধান পণ্যের ক্ষেত্রে এমন চিত্র দেখা গেছে। যা বাজারকে অস্থিতিশীল করেছে। এলোমেলো ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ক্রয় নীতিমালা শক্তিশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলোকে সুবিধা দিয়েছে এবং সাধারণ ভোক্তাদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। নিয়মিত মজুত পর্যবেক্ষণের অভাবে এই সমস্যাগুলোকে আরও জটিল করেছে।

শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ঋণদান প্রক্রিয়া ব্যাংকিং খাতের সংকটকে আরো গভীর করেছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত আর্থিক মূল্য হিসাব করলে ১৪টি ঢাকা মেট্রো সিস্টেম বা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণের সমান হবে। ধারাবাহিক ঋণ খেলাপি এবং উচ্চ প্রোফাইল জালিয়াতি আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং উৎপাদনশীল খাত থেকে মূলধন সরিয়ে নিয়েছে।

গত এক দশকে ভিসা ক্রয়ের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হুন্ডির মাধ্যমে ১৩ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করেছে। যা ঢাকা এমআরটি-৬ (উত্তরা-মতিঝিল) নির্মাণের খরচের চার গুণ। সিন্ডিকেট এবং শোষণমূলক রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রম অভিবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। যা রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের মধ্যে দুর্নীতি পরিবেশগত অবক্ষয়কে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত জলবায়ু সম্পদের অপব্যবস্থাপনা স্থায়িত্বমূলক উদ্যোগগুলোকে ব্যাহত করেছে এবং জলবায়ু-উদ্ভূত ঝুঁকির বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।