২১ আগস্ট মামলা
রায়ে খুশি বাবর-পিন্টুর স্বজনরা, বললেন ‘ন্যায়বিচার’ পাওয়ার কথা
আদালতে লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান।
একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় উচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ে সন্তোষ জানিয়েছেন খালাস পাওয়া আসামিদের স্বজনরা।
তাদের ভাষ্য, এই রায়ের মাধ্যমে তারা ‘ন্যায়বিচার’ পেয়েছেন।
কুড়ি বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আসামিদের সবাইকে রোববার খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট।
আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়।
জজ আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান বলেছেন, ন্যায়বিচার পেয়েছেন তারা।
“আল্লাহর দিকে চেয়েছিলাম ন্যায়বিচারের জন্য। আল্লাহ ন্যায়বিচার দিয়েছে, আমাদেরকে দয়া করেছেন। আল্লাহর দরবারে শুকুরিয়া আদায় করছি।”
বাবরের ছেলে লাবিব ইবনে জামান বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ। ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম, ন্যায়বিচার পেয়েছি। আশা করছি, ইনশা-আল্লাহ আমার বাবাকে ফিরে পাব।”
মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম পিন্টু। তিনি এখনও কারাগারে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পিন্টুর ছোট ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু তিন বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেন।
“আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এজন্য পারিবারিকভাবে খুশি হয়েছি। আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ।”
মামলার আরেক আসামি কুমিল্লার বিএনপি নেতা শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ভাই কাজী জুন্নুন বসরী বলেন, ওই মামলার পর তার ভাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রায়ের মাধ্যমে এর অবসান হয়েছে।
“এই রায় জাতির জন্য একটা আনন্দঘন মুহূর্ত। এই রায়ের মাধ্যমে জাতি কলঙ্কামুক্ত হলো। মামলার পরে আমার ভাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। আমাদের পরিবারের ওপর ফ্যাসিস্ট সরকার নানাভাবে হয়রানি করেছে।
“আমার মা তার বড় ছেলের দূরে থাকা, মামলার কারণে চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি একটা কথাই বলতেন, মরার আগে ভাইকে বাংলাদেশের মাটিতে দেখতে চান। তিনি এই আকুতি নিয়ে চলে গেছেন। রায়ের মাধ্যমে আমাদের পরিবার পুরো বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। যাদের রক্তের বিনিময়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা, এরপর আমরা মুক্তি পেয়েছি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ।”