রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্রেকিং

জাতীয়

আমাদের নিয়ত সহিহ: শপথ নিয়ে বললেন সিইসি

 আপডেট: ১৮:৫৭, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

আমাদের নিয়ত সহিহ: শপথ নিয়ে বললেন সিইসি

দেশের চতুর্দশ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই ‘ভালো নির্বাচনের’ প্রতিশ্রতি দিলেন এ এম এম নাসির উদ্দীন।

বললেন, “আশ্বস্ত থাকুন, আমাদের নিয়ত সহিহ। আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারি, ভালো নির্বাচন হবে।”

রোববার দুপুর দেড়টায় সুপ্রিম কোর্ট জাজেজ লাউঞ্জে নাসির উদ্দীন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

এরপ সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়ে সিইসি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি বলেন, “জনগণের সহযোগিতা লাগবে, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা লাগবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এই জাতিকে একটা ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল (বিশ্বাসযোগ্য) নির্বাচন আমরা করব।”

অন্তর্বর্তী সংস্কারের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের পর আপনারা কাজ শুরু করবেন, নাকি এখন থেকে কাজ শুরু করবেন- জানতে চাওয়া হয় সিইসির কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, “দেখেন সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া, কিন্তু একটা নির্বাচন করতে গেলে আমাকে তো কিছু এসেন্সিয়াল সংস্কার তো লাগবে।”

উদহারণ টেনে তিনি বলেন, “কেউ বলছে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) আবার কেউ বলছে, পিএফটিএফ অর্থাৎ এখন যেটা চলমান আছে, আগের সিস্টেমে। সংবিধানের যদি ফয়সালা না হয়, আমরা কোনটায় যাব? নির্বাচনটা করতে গেলে এখনকার যে জেনারেশন যারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে, বছরের পর বছর তাদের কাছে থেকে তো ভোটার লিস্টটা আনতে হবে। ভোটার লিস্ট করতে হবে।”

সংবিধান ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারের অপেক্ষার কথাও বললেন নাসির উদ্দীন।

তার ভাষ্য, “কোথায় কোথায় রিফর্মের (সংস্কার) দরকার হবে, সেটা আমরা পাব। কারণ যেহেতু একটা সংস্কার কমিশন কাজ করছে নির্বাচন কমিশনকে সংস্কার করার জন্য। তাদের পরামর্শ আসুক, আমরা দেখি কোনটা কোনটা গ্রহণযোগ্য হবে। সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে আমাদের।

“সংবিধান ঠিক না করে, সংবিধান যদি ঠিক না হয়, তাহলে আমরা আমাদের যাত্রায় এলোপাতাড়ি হয়ে যাবে। নির্বাচন নিয়ে সংস্কার কমিশন কাজ করছে, এটাও শেষ হোক।”

তিনি বলেন, “বেশি দিন তো নাই, সরকার বলছে ডিসেম্বর পর্যন্ত টাইম দিয়েছে। “আপনারা আশ্বস্ত থাকুন, আমাদের নিয়ত সহিহ, আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারি, ভালো নির্বাচন হবে।”

সিইসি তার শপথের বিষয়ে বলেন, “এর সম্মানটা রাখতে চাই। আমার শপথ ভঙ্গ হবে না, আমি এই দায়িত্বকে জীবনের একটি অপরচুনিটি (সুযোগ) হিসেবে দেখছি। দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত, তারা ফ্রি ফেয়ার একটা ইলেকশনের জন্য সংগ্রাম করেছে, অনেক আন্দোলন করেছে।

“বিগত বছরগুলোতে অনেকে রক্ত দিয়েছে। আমি তাদের একটা ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল ইলেকশন দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করব।”

রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, “এবার আরেকটা সুযোগ এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলো, যারা নির্বাচন করবে তারা ১৫-১৬ বছর ধরে বলে আসছে আমরা ভোটের অধিকার চাই। আমরা অবাধে ভোট দিতে চাই। সুতরাং আমরা তাদের সঙ্গে পাব। তাদের দাবিকে বাস্তবায়ন করব, তারাও জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ।”

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার ইচ্ছে আছে কিনা- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “রিফর্ম কমিটির সুপারিশ আসুক, অনেক বির্তক চলছে, বিতর্কের ফয়সালা হোক। ফয়সালা হলে আপনারা দেখতে পারবেন।”

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন ছাড়াও দুপুরে শপথ নেন চার নির্বাচন কমিশনার সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব তহমিদা আহ্‌মদ ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

ক্ষমতার পালাবদলের পর এমন এক সময়ে নাসির কমিশন দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে, যখন রাষ্ট্র সংস্কার করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।