কিছু গণমাধ্যম ছাত্র-জনতাকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছিল: প্রেস সচিব
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকার পতনের ডাকে শুরু হওয়া আন্দোলনের পুরো সময় কিছু গণমাধ্যম ছাত্র-জনতাকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও এর কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মীদের মধ্যে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ফুটে উঠেছিল।
বর্তমান সময়ে এ ক্ষেত্রের কারও আচরণে যেন এমনটি না হয়, সে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই’র উদ্যোগে আয়োজিত স্বৈরচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে ‘জুলাই গণহত্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা: জবাবদিহিতা ও সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ওরা (আওয়ামী লীগ) যেরকম ১৫-১৬ বছর আমাদের ভয়েস কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কাউকে শিবির ট্যাগ দিয়ে, কাউকে বিএনপি ট্যাগ দিয়ে, এ ধরণের পরিবেশ আমরা যেন না করি। আমরা যেন আমাদের অ্যাটিচিউডে (আচরণে) ফ্যাসিবাদী না হই। আমরা যেন আরেকজনের ভয়েস কেড়ে না নিই। বাংলাদেশে যারা ক্রিটিসাইজ করে তাদের ভয়েস আমরা যেন কেড়ে না ননিই। আমরা প্রত্যেকটা ভয়েসকে ওয়েলকাম জানাই। প্রত্যেকটা ভয়েস বাংলাদেশের জারি থাকুক।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, যারা যারা গুম হয়েছেন, তাদেরকে নিয়ে কারা কটূক্তি করেছে সেটা জানা উচিত। শাপলা চত্বরে হেফাজতের যে কিলিং হয়েছে, আমরা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডে এগুলো বের করবো। ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত শেখ হাসিনা অনেক প্রেস কনফারেন্স করেছেন। প্রত্যেকটার বিবরণ আছে। কে কি করেছেন সেটা রয়েছে। প্রত্যেকটা ঘটনা ধরে ধরে কার কি রোল ছিল সেটা লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট রাইট গ্রুপগুলোকে আমরা ইনভাইট করবো। তারা যাতে এসে ইনভেস্টিগেশন করে দেশে কি ধরনের সাংবাদিকতা হয়েছে। প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিয়ে তারা অনেক স্টেটমেন্ট দিয়েছে। তাদের স্টেটমেন্টকে আমরা ওয়েলকাম জানাই। কিন্তু গত ১৫ বছরে কি ধরনের ভয়াবহ জার্নালিজম হয়েছে সেটা জানুক।
তিনি বলেন, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে সাংবাদিকতা হয়েছে, টিভিতে যেভাবে আমাদের স্টুডেন্টদেরকে কারা সন্ত্রাসী বলেছে সেগুলো জানা উচিত। আমরা ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট রাইট গ্রুপগুলোকে ইনভাইট করবো, আপনারা আসুন এবং ইনভেস্টিগেশন করুন কি ধরনের সাংবাদিকতা হয়েছে। কোথায় কোথায় ফ্যাসিবাদী বয়ান তৈরি করা হয়েছে দেখুন। প্রত্যেকটি বিষয়ে আমরা সিরিয়াসলি রিসার্চ করার দাবি রাখি। রিচার্স করলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের যে দায় রয়েছে সেটির জায়গাগুলো মিটবে। তাদেরকে আমরা দেখাতে পারবো কোন কোন ঘটনাগুলো ঘটেছে।
ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই’র আহ্বায়ক সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন শিশিরের সভাপতিত্বে ও মুখপাত্র প্লাবন তারিকের সঞ্চালনায় আলোচনা উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাসসের সিনিয়র সাংবাদিক এস এম রাশেদুল ইসলাম, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চিফ রিপোর্টার আব্বাস উদ্দিন নয়ন, গবেষক ও শিক্ষক মাহাবুব আলম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আওয়াল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ প্রমুখ।