`জয় বাংলা` স্লোগান, পিটিয়ে দেওয়া হল পুলিশে
গুলিস্তানের বঙ্গব্ন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে 'জয়বাংলা' স্লোগান এবং ‘শেখ হাসিনা আবারো ফিরে আসবেন’ বলায় বেশ কয়েকজনে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ‘ছাত্র-জনতা’।
রোববার সকাল থেকে ওই এলাকায় কারো গতিবিধি 'সন্দেহজনক' মনে হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, “সকাল থেকে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও নূর হোসেন চত্বর এলাকা থেকে অন্তত ১২ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
"সন্দেহ হলেই ছাত্র-জনতা কাউকে আটক করে আমাদের কাছে দিচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত ১০-১২ জনকে হেফাজতে নিয়েছি।"
'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে' মাঠপার্যায়ে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন ডিএমপির এই উপ কমিশনার। তবে প্রাথমিকভাবে আটকদের নাম পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।
নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচি প্রতিহতে রোববার সকাল থেকেই দলের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিএনপি, এর বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিষম্যবিরোধী ছাত্ররা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে কার্যালয়ের সামনে কয়েকজনকে মারধরের পর পুলিশে দেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। যাদের ধরা হয়েছে, তারা কেউ কেউ 'জয় বাংলা', আবার কেউ 'শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন' বলে স্লোগান দেন।
বেলা ১টার দিকে এক বয়স্ক ব্যক্তি এসে 'জয়বাংলা' স্লোগান দিতেই তাকেও মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়।
স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় যুবলীগ কর্মী নূর হোসেনকে হত্যার দিনটিতে ঢাকার জিপিও এলাকার ‘নূর হোসেন চত্বরে’ শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ; যেটি সরকার পতনের পর রাজপথে দলটির প্রথম কর্মসূচি।
ওই কর্মসূচি প্রতিহত করতে শনিবার মধ্যরাতেই 'ছাত্র-জনতা' ও 'গণঅধিকার পরিষদ' ব্যানারে রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন একদল মানুষ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদেরও সেখানে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
সরকারের দিক থেকে আওয়ামী লীগের এ কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন ক্রীড়া ও শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সকাল ৯টার পর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপি ও বসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে মিছিলও করেন।
সিপিবি, বাসদ, গণধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সকালে নূর হোসেন চত্বরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টার দিকে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন।
‘আমার সোনার বাংলায়, ফ্যাসিবাদের ঠাঁই নাই; ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’ ‘উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’– এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, "কর্মসূচির নামে কাউকে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।"