মাগুরার সেই শিশুটির ‘ধর্ষকের’ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মৃত্যুর পর স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে মাগুরা পৌর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে শিশুটির মরদেহ মাগুরা স্টেডিয়ামে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা আসামিদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত আটটা পর্যন্ত বাড়িটিতে আগুন জ্বলছিল।
শিশুটির বাড়ি জেলার শ্রীপুর উপজেলার একটি গ্রামে। সেখানে রাত ৮টা ২০ মিনিটে দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। ওই গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।
এদিকে, আজ দুপুরে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আজ সকালে তার তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, এর মধ্যে দুবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি।
শিশুটির পরিবার ও পুলিশ জানায়, কয়েক দিন আগে সে তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে আজ সে মারা যায়।
ঘটনার পর গত শনিবার শিশুটির মা ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা রিমান্ডে রয়েছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে।