‘তুয়া ও ভয়ঙ্কর বিড়ালেরা’ এল বইমেলায়

তুয়া ছোট্ট মেয়ে, কিন্তু তার মন অনেক বড়। সে ভালোবাসে সব প্রাণীকে, বিশেষ করে বিড়ালদের। আর ভালোবাসবেই বা না কেন? তাদের নরম লোম, উষ্ণ দৃষ্টি আর ছোট্ট ছোট্ট গুটিগুটি পায়ের শব্দে তুয়ার মন ভরে যায়।
কিন্তু তার মা? মা একদমই পছন্দ করেন না বিড়ালদের। বিশেষ করে তখন, যখন তারা বাসার জুতোর র্যাক দখল করে নেয়! মা-বিড়ালটি তার তিনটি ছানাসহ জায়গা করে নিয়েছিল ঠিক জুতোর তাকের ভেতর।
সেখানে তারা আরামে গুটিশুটি মেরে থাকত, লাফিয়ে বেড়াত, খেলা করত। আর সেই সঙ্গে তাদের লোম ঝরিয়ে দিত চারদিকে, এমনকি মায়ের দামি জুতোর ওপরেও। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার? ওরা হাগু-পিশু করত ঠিক জুতোর মধ্যেই!
মা বেজায় রেগে গেলেন। তিনি এক মুহূর্তের জন্যও ওদের আর সহ্য করতে রাজি নন। কিন্তু তুয়া? সে তো ওদের খুব ভালোবাসে! সে চায়, বিড়ালগুলোকে ঘরে এনে পোষ মানাবে, আদর করবে, খাওয়াবে, আগলে রাখবে।
মা কিছুতেই রাজি হলেন না। বরং করলেন ভয়ংকর এক কাজ। ড্রাইভার রশিদ আংকেলকে ডেকে মা বললেন, এই বিড়ালগুলোকে নিয়ে যাও! যেন আর না ফেরে। রশিদ আংকেল বিড়ালগুলোকে একটা বস্তায় পুরলেন। মা-বিড়াল আর তার তিনটি ছোট্ট ছানা বস্তার মধ্যে মিউ মিউ করে কাঁদতে লাগল।
তুয়া ফেরাতে পারলো না তাদের। রশিদ আংকেল গাড়িতে চড়ে বিড়ালগুলোকে অনেক দূরে নিয়ে গেলেন। এমন এক জায়গায়, যেখান থেকে তারা আর ফিরে আসতে পারবে না। তুয়ার মন ভেঙে গেল। বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল কান্না। কত রাত সে ঘুমাতে পারল না, কতদিন সে জানালার পাশে বসে বিড়ালছানাগুলোর জন্য অপেক্ষা করল, তার ঠিক নেই।
তারপর এক রাতে এক অলৌকিক ঘটনা ঘটল। হঠাৎ জানালার কাঁচে খচখচ আওয়াজ। তুয়া ঘুমের ঘোরে বুঝতে পারল না— কী হচ্ছে? এরপর একটা বিশাল ছায়া নেমে এলো ঘরের ভেতর। সে চোখ মেলে তাকাতেই দেখল— এক ইয়াব্বড়ো বিড়াল! তার লোম ঘন, চোখ দুটো ভয়ঙ্কর জ্বলজ্বল করছে। বিশাল থাবায় সে জানালার রেলিং আঁকড়ে ধরে আছে।
তুয়ার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। এরপর যা ঘটল, তা কল্পনাকেও হার মানায়। বিড়ালটি এক ঝটকায় তুয়ার কাঁধ চেপে ধরল, আর পরমুহূর্তে ঝপ করে জানালা ফুঁড়ে উড়ে গেল আকাশে! তুয়া প্রথমে ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু একটু পর সে টের পেল— সে উড়ছে! শীতল বাতাস তার চুল এলোমেলো করে দিচ্ছে। নিচে তাকিয়ে দেখে, তার পরিচিত শহর ছোট হতে হতে মিলিয়ে যাচ্ছে।
কোথায় যাচ্ছে তারা? এ কেমন দেশ? বিড়ালটি তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? সেই জায়গাটি কি বাস্তব, নাকি কোনো জাদুর রাজ্য? সেখানে কি বিড়ালেরা রাজত্ব করে? নাকি এটি কেবল তুয়ারই কল্পনার জগৎ?
এই সব রহস্যের উত্তর মিলবে ‘তুয়া ও ভয়ঙ্কর বিড়ালেরা’ কিশোর উপন্যাসে। লেখক ও সাংবাদিক মশিউল আলমের লেখা এই উপন্যাসটি শিশু-কিশোরদের জন্য এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে। আর এই গল্পকে আরও মোহময় করে তুলেছেন প্রচ্ছদশিল্পী নিয়াজ চৌধুরী তুলি।
‘তুয়া ও ভয়ঙ্কর বিড়ালেরা’ প্রকাশ করেছে মাওলা ব্রাদার্স। পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলায়, প্যাভিলিয়ন ৪-এ। ১০৩ পৃষ্ঠার এই বইটির মুদ্রিত মূল্য ২৭০ টাকা।